বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, “আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি পুরো জীবনই উৎসর্গ করেছেন ।”
তারেক রহমান স্ট্যাটাসে বলেন, আমার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ডাক শুনে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইলাইহি রাজিউন। অনেকের কাছে তিনি ছিলেন দেশনেত্রী, আপসহীন নেতৃত্বের প্রতীক আবার অনেকের কাছে গণতন্ত্রের মা, বাংলাদেশের মা। আজ আমরা এমন একজন পথপ্রদর্শককে হারিয়েছি, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় অমুল্য অবদান রেখেছেন।
তিনি আরও লিখেছেন, আমার কাছে খালেদা জিয়া ছিলেন সেই মা, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে। তিনি আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও অবিচারের বিরুদ্ধে, এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্যে থেকেও তিনি ছিলেন পরিবারের প্রকৃত অভিভাবক; এমন একজন আলোকবর্তিকা, যাঁর অসীম ভালোবাসা সবচেয়ে কঠিন সময়েও আমাদের শক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছে। বারবার গ্রেপ্তার ও নিপীড়নের শিকার হয়েও তিনি কখনও হার মানেননি, বরং যন্ত্রণা ও একাকিত্বের মধ্যে থেকেও অদম্য সাহস ও দেশপ্রেম প্রদর্শন করেছেন।”
তারেক রহমান আবেগঘনভাবে যোগ করেন, “আমরা আমাদের মাকে হারিয়ে যেন এতিম হয়ে গেছি। দেশের জন্য তিনি অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েছেন—স্বামীও হারিয়েছেন, সন্তানও হারিয়েছেন। তাই দেশের মানুষই ছিল তার পরিবার, তার সত্তা, তার অস্তিত্ব। তিনি রেখে গেছেন জনসেবা, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় চিরকাল উদাহরণ হয়ে থাকবে। সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। তার প্রতি দেশবাসীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার জন্য আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।”
খালেদা জিয়া মঙ্গলবার সকাল ৬টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনিসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল।
আমারবাঙলা/এসএবি