বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাস নামের এক হিন্দু যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বজরং দলের ডাকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা ব্যারিকেড অতিক্রম করে হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত সক্রিয় হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এবং ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাস নামের এক হিন্দু যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আচরণ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এর আগে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে এর আগেও একটি ছোট আকারের উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। ২০ ডিসেম্বর রাতে কয়েকজন ব্যক্তি গাড়িতে করে সেখানে এসে হাইকমিশনের ফটকের সামনে উচ্চস্বরে স্লোগান দেয়। ঢাকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার মো. ফয়সাল মাহমুদ জানান, তারা বেশিক্ষণ অবস্থান না করে কিছু সময় পরই সেখান থেকে সরে যায়।
এই ঘটনার পর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই রাতে খুব সীমিতসংখ্যক—প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন—মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিল এবং পরিস্থিতি কখনোই নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক হয়ে ওঠেনি।
তবে ঢাকার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, কঠোর নিরাপত্তা-নিয়ন্ত্রিত কূটনৈতিক এলাকায় এভাবে লোকসমাগমের সুযোগ পাওয়া স্বাভাবিক নয়। বিষয়টিকে একটি গুরুতর নিরাপত্তা ত্রুটি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এমন একটি এলাকায় অবস্থিত, যেখানে সাধারণত অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের কর্মসূচি হওয়ার কথা নয়। তাঁর প্রশ্ন, কীভাবে উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ওই সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করতে পারল।
আমারবাঙলা/এসএবি