বার্সেলোনা ও স্পেন জাতীয় দলের হয়ে ব্যস্ত মৌসুম শেষ করার পর লামিনে ইয়ামাল এখন লম্বা ছুটিতে। ছুটি কাটাতে এই উদীয়মান তারকা প্রথমে গিয়েছিলেন ইতালিতে।
সম্প্রতি সেখানকার রিসোর্টের সুইমিংপুলের পাশে বিশ্রাম নেওয়ার একটি ছবি সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন। আরেকটি ছবিতে তাঁকে পাথুরে পাহাড়ের পাশের এক জলাশয়ে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
এর কয়েক দিন পর স্প্যানিশ মডেল, ইনফ্লুয়েন্সার ও বিমানের ক্রু ফাতি ভাজকেজও সুইমিংপুলের পাশে ও জলাশয়ে নৌকা নিয়ে ঘোরার ছবি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন।
প্রথম ছবি দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইয়ামাল ও ভাজকেজ যে সুইমিংপুলের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, সেটার সামনের গাছ আর ওপরের ছাউনি একই। দ্বিতীয় ছবিতে জলাশয়ের পেছনে যে পাথুরে পাহাড়, সেটাও এক।
ব্যস, তাতেই দুইয়ে-দুইয়ে চার মিলিয়ে ফেলে স্প্যানিশ দৈনিক মুন্দো দেপোর্তিভো। সংবাদমাধ্যমটি সব যাচাই করে নিশ্চিত হয় যে, ১৭ বছর বয়সী ইয়ামাল আর ৩০ বছর বয়সী ভাজকেজ ইতালির একই স্থানে অবস্থান করেছেন। তাদের দাবি, বার্সার তরুণ উইঙ্গার তাঁর চেয়ে বয়সে ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে স্প্যানিশ সাময়িকী লেকচারাস তো জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ নিয়েই হাজির হয়েছে। লেকচারাস তাদের কাভারে ইয়ামাল ও ফাতির একসঙ্গে অবকাশ যাপনের ছবি প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি নিজেদের ওয়েবসাইটে এ নিয়ে এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনও করেছে।
লেকচারাসের ক্যামেরায় ধরা পড়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইয়ামাল ও ফাতি একসঙ্গে স্পিড বোট নিয়ে ঘুরছেন। ইয়ামাল স্পিড বোট চালাচ্ছেন আর পেছনে বসা ফাতি তাঁকে জড়িয়ে ধরে আছেন। আর কাভারে ব্যবহৃত ছবিতে দুজনকে কোনো এক বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করতে দেখা যাচ্ছে।
তবে সংবাদমাধ্যমগুলো এমন দাবি আগেই নাকচ করে দিয়েছেন আরেক ইনফ্লুয়েন্সার জাভি দে ওইয়োস। ঘটনাচক্রেই ইয়ামাল ও ভাজকেজ একই জায়গায় ঘুরতে গেছেন বলে মনে করেন ওইয়োস। তিনি বলেছেন, ‘তাঁদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া সেখানে শুধু তাঁরা দুজন যাননি, আরও অনেকে ছিলেন।’
ওইয়োসের দাবি, ইয়ামালের সঙ্গে তাঁর কয়েকজন বার্সা সতীর্থও ইতালির একই জায়গায় অবকাশ যাপনে গিয়েছিলেন, ‘লামিনে (ইয়ামাল) একাই সেখানে যাননি। তাঁর বার্সেলোনা সতীর্থরাও ছিলেন। সম্ভবত ফাতির কারও সঙ্গে কিছু একটা আছে অথবা তিনি লামিনের কোনো সতীর্থের বন্ধু।’
এদিকে ইয়ামালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়ানোর পর থেকে হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ফাতি। তিনি বলেছেন, ‘এটা দুঃখজনক। কিছু মানুষের ভেতরটা এতই অন্ধকারাচ্ছন্ন যে তারা এমন একজনের মৃত্যু কামনা করে, যাকে তারা চেনেই না। যারা আমার ক্ষতি চায়, আমি তাদের আরোগ্য কামনা করি। কারণ, তারা সুস্থ হয়ে থাকলে অন্য কারও ধ্বংস কামনা করতে পারত না।’
ফাতির পুরো নাম ফাতিমা ভাজকেজ দোসান্তোস। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা স্পেনের গালিসিয়ায়। তাঁর লেখা একটি বই আছে। স্প্যানিশ ভাষায় লেখা বইটির নাম Y que vengan a por mí, যার বাংলা অর্থ ‘এবং তাদের আমার জন্য আসতে দাও’।
ইউটিউবে ১০ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে ফাতির। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ, টিকটকে ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া টুকটাক মডেলিংয়ের পাশাপাশি একটি এয়ারলাইনের ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হিসেবেও কাজ করছেন।
এর আগে আলেক্স পাদিয়া নামে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ইয়ামালের। গত বছর স্পেন ইউরো জেতার পর পাদিয়াকে সবার সামনে নিয়ে আসেন বার্সার প্রতিভাবান উইঙ্গার। পাদিয়া ইয়ামালের চেয়ে ২ বছরের বড়। তবে দুজনের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি।
ভাঙনের কারণ হিসেবে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, ইয়ামালের সব সম্পত্তি তাঁর মায়ের নামে নিবন্ধিত এবং বেতন তাঁর মায়ের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ায় পাদিয়া অসন্তুষ্ট ছিলেন। পরে পাদিয়াকে অন্য এক পুরুষের কোলে দেখতে পান ইয়ামাল। এরপরই তাঁকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করে দেন এবং সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
ইতালিতে কয়েক দিন অবকাশ যাপনের পর ব্রাজিলে ঘুরতে গেছেন ইয়ামাল। বর্তমানে তিনি সাও পাওলোয় অবস্থান করছেন। ব্রাজিলের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইয়ামাল শিগগিরই তাঁর আদর্শ নেইমারের সঙ্গে দেখা করবেন।
আমারবাঙলা/জিজি