রাজশাহীর তানোরে ৩০–৩৫ ফুট গভীর একটি গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু স্বাধীনকে উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের (বোরিং) ওই গর্তে আটকে থাকা শিশুটিকে বের করে আনতে তিনটি এক্সকাভেটরের সাহায্যে পাশে প্রায় ৪০ ফুট গভীর আরেকটি গর্ত খনন করা হয়েছে। প্রাথমিক কাজ শেষ করে এখন মূল গর্ত পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।
ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তানোরে দুই বছর বয়সী শিশু স্বাধীন হঠাৎ গভীর গর্তে পড়ে যায়।
মায়ের হাত ধরে কাটা ধানের ক্ষেতে হাঁটার সময়ই শিশুটি গর্তে পড়ে যায়। সে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবের ছেলে। রাকিব ঢাকার একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।
পুকুরপাড়ে গভীর নলকূপ বসানোর জন্য খোঁড়া ৩০–৩৫ ফুট গভীর ওই গর্তে শিশুটি পড়ে যাওয়ার পর পুরো উপজেলায় উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। শুরুতে শিশুটির সাড়া পাওয়া গেলেও পরে ধীরে ধীরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
বিকেল চারটা থেকে উদ্ধার অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজারো মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। এতে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ ব্যাহত হয় এবং প্রশাসনকে বেশ বেগ পেতে হয়। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স ও প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামও প্রস্তুত রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচন্দর ইউনিয়নের এই এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে এবং বর্তমানে নতুন কোনো গভীর নলকূপ বসানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। এমন পরিস্থিতিতে কোয়েলহাট গ্রামের তাহের নামে এক ব্যক্তি পানির স্তর পাওয়া যায় কি না জানতে ওই গর্তটি খনন করেছিলেন। পরে তিনি গর্তটি ভরাট করেন, কিন্তু বর্ষার পানিতে মাটি বসে গিয়ে আবার নতুন করে গর্ত তৈরি হয়—সেখানেই শিশুটি পড়ে যায়। শিশুটিকে উদ্ধারে তিনটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কাজ করছে।
সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, “আমাদের টিম অনুসন্ধান চালাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিশ্চিত হতে পারব ৪০ ফুটের মধ্যে পাওয়া যায় কি না। যদি না পাই এবং ভিকটিম আরও গভীরে চলে যায়, তাহলে বিকল্প উপায়ে চেষ্টা করতে হবে, যেখানে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।”
তিনি আরও জানান, “ভিকটিম আটকা পড়তে পারে—এমন সম্ভাবনা রয়েছে। মূল গর্ত থেকে চার ফুট দূরে আমরা টানেল করেছি। সেখানে ভিকটিম আছে কি না এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি; অনুসন্ধান চলছে। গতকাল সাড়া পাইনি, আজও পাইনি। ৩০–৩৫ ফুটের মধ্যে না পাওয়া গেলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের অনুমতি নিয়ে আরও গভীরে লোহার যন্ত্র ব্যবহার করে অনুসন্ধান চালানো যেতে পারে।
আমারবাঙলা/এসএবি