কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া ইউনিয়নের মসুয়াগ্রামে অস্কার বিজয়ী বিশ্বনন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িতে বুধবার (১৪ মে) থেকে ৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে।
জনশ্রুতি আছে, প্রায় দুইশত বছর আগে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ হরিকিশোর রায় চৌধুরী, কালভৈরবী পূজা উপলক্ষে এই মেলার প্রচলন করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ বুধবার এই মেলা বসে। বর্তমানে সেই কালভৈরবীর পূজা না হলেও বন্ধ হয়নি মেলাটি।
উল্লেখযোগ্য যে, সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িটি রায় বাড়ী নামে পরিচিত। রায় বাড়ীর সামনে খোলা মাঠ ও পুকুরের আশেপাশে বিশাল জায়গাজুড়ে বসে এ মেলা। জানা যায়, এ বাড়িতেই ১৮৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী এবং ১৮৮৭ সালের জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা বিশিষ্ট ছড়াকার সুকুমার রায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির আগেই উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। তাদের পরিত্যক্ত কারুকার্য খচিত ভগ্ন ও প্রাচীন দালান পরিবেষ্টিত বিশাল আয়তনের বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে আংশিক সংস্কার হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, মেলায় রয়েছে রকমারি পণ্যের কয়েকশত স্টল। এর মধ্যে রয়েছে কাঠের আসবাবপত্র, গৃহস্থালির নানা সামগ্রী, খেলনা, মিষ্টান্ন ও প্রসাধনীসহ নানা ধরনের পণ্য সামগ্রীর দোকান। এছাড়াও রয়েছে শিশুদের চিত্ত বিনোদনের জন্য নাগরদোলাসহ নানা আয়োজন। স্থানীয় বাসিন্দা মানিক ভট্টাচার্য জানান, মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবি সাহিত্যিক ও বহু দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। প্রতিবছরের মত এ বছরও মেলায় বসবে গান ও কবিতা পাঠের আসর।
মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি গোলাপ মিয়া জানান, প্রায় দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা এখন এই অঞ্চলের সম্প্রীতির প্রতীক। মেলাকে ঘিরে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাইদুল ইসলাম বলেন, মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং এ বছর মেলার সরকারি ডাক হয়েছে ৭১ হাজার ৭০০ টাকা।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতি হলো মেলা। মেলা উপলক্ষে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/ইউকে