কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাত জন চিকিৎসক অন্যত্র প্রেষনে থাকায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার সাধারণ মানুষ। চিকিৎসক সংকটের মধ্যেও এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রেষণে রাখার প্রক্রিয়া বাতিলের দাবী এলাকাবাসীর।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবার ভরসা একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩১ টি। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ১৪টি পদ। এখানে মাত্র ১৭ জন ডাক্তার কাগজে কলমে কর্মরত। তন্মধ্যে একজন ডাক্তার মাতৃত্ব জনিত ছয় মাসের ছুটি অতিবাহিত হলেও আসার খবর নেই।
তাছাড়া সাত জন চিকিৎসক প্রেষণে রাজধানী ঢাকা কিংবা তাদের সুবিধা জনক স্থানে রয়েছেন। শুধু বেতন ভাতার সময় তারা কটিয়াদী আসেন। দীর্ঘদিন যাবতই চলে আসছে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমন অবস্থা। এখানে প্রতিদিন গড়ে কর্মরত থাকেন চার থেকে পাঁচ জন চিকিৎসক। ফলে উপজেলার সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাছাড়া অনেকেই চিকিৎসার প্রয়োজনে ছুটে যাচ্ছেন জেলা শহর কিংবা বিভিন্ন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালে অথবা অপেক্ষায় থাকেন শুক্রবারের জন্য। প্রতি শুক্রবার সকালে অতিথি পাখির মত কিছু চিকিৎসক আসেন, কটিয়াদী সদরের বিভিন্ন ক্লিনিকে, আবার সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই তারা চলে যান। তাদের নিকট চিকিৎসা করাতে সাধারণ কর্মজীবী মানুষের শেষ সম্বল জায়গা জমি বা সঞ্চিত অর্থ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় , উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার লোপা চৌধুরী ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট থেকে মাতৃত্বজনিত ছুটিতে আছেন। ডাক্তার হাবিবুর রহমান মৃধা ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ থেকে ঢাকা শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে, এনাসথেলজিস্ট ডাক্তার ফাহিম আহমদ ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা কুর্মিটোলা ৫০০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আছেন। ডাক্তার কাজী ফারহানা বিনতে শামীম ৮ এপ্রিল ২০২৪ থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, সহকারি সার্জন ডাক্তার আফসানা সুলতানা তমা ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, এখানে যোগদান করেই পরদিন ২রা সেপ্টেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন।
আবাসিক ডাক্তার সজীব কুমার ঘোষ ২৯ আগস্ট ২০২২ থেকে কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, সহকারী সার্জন ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সহকারি সার্জন ডাক্তার রাইস মুঞ্জেরিন ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেষণে কর্মরত আছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আর এম ও)ডাক্তার সৈয়দ মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, প্রতিদিন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে রোগী থাকেন ৬০ থেকে ১০০ জন, অপরদিকে বহির বিভাগেও গড়ে ৬০০ থেকে ৮০০ জন রোগী চিকিৎসা সেবার জন্য উপস্থিত থাকেন।
কিন্তু চিকিৎসক সংকট থাকার কারণে দূর- দুরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ডাক্তার ঈশা খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। প্রেষন বাতিলের জন্য একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি এবং শূন্য পদ পূরণের জন্যও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            