ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর সীমান্তে ভারতের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফের সদস্যদের পিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহত অবস্থায় ওই যুবককে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুরাদুল ইসলাম মুন্না (৪০) বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের সেজামুড়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। সেজামুড়া গ্রামটি ভারতের সীমান্তঘেঁষা।
মুন্নার পরিবারের অভিযোগ, বিএসএফ সদস্যরা মুরাদুলকে ডেকে ভারতের সীমান্তের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মারধরসহ নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অবশ্য মুন্নার পরিবারের অভিযোগের সঙ্গে একমত না। মঙ্গলবার রাতে ২৫ বিজিবির সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, নিহতের পরিবার ও স্বজনেরা নানা কথা বলতেই পারেন। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটি হলো মুন্না দুই দেশের সীমান্তের কাঁটাতার অতিক্রম করে অবৈধভাবে ভারতের সীমানায় প্রবেশ করেন এবং সুস্থভাবেই বাংলাদেশে ফেরত আসেন। সীমান্তের বিজিবির টহল দলের সদস্যরা তাকে দেখতে পান। জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন। তবে ভারতের অভ্যন্তরে গিয়েছেন বলে স্বীকার করেননি। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি আহত হয়েছিলেন কিনা বা কোনো চোরাকারবারির সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে কিনা জানা যায়নি।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের কাঁটাতার থেকে ১৫০ থেকে ৩০০ গজের ভেতরে বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়ায় মুন্নার পরিবারের ফসলি জমি রয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মুন্না সেখানেই বসবাস করেন। মঙ্গলবার দিনভর মুন্না নিজের লিচুগাছে পানি দেন। দুপুরে ঘরে ভাত খেয়ে জমি দেখতে যান। বিকাল পাঁচটার পরও তিনি বাড়িতে ফেরেননি। স্ত্রী রত্না আক্তার বাড়ি থেকে বের হয়ে সীমান্তে খোঁজাখুঁজি করেও স্বামীর সন্ধান পাননি। একজন ফোন দিয়ে তাকে জানিয়েছিলেন, মুন্নাকে বিএসএফের সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছেন। সন্ধ্যার দিকে ফসলি জমিতে মুন্না পড়ে ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে চম্পকনগর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
রত্না আক্তার বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার সময় আমার স্বামী জানিয়েছেন, তাকে বিএসএফের সদস্যরা ডেকে নিয়ে যান। তাকে ক্যাম্পে নিয়ে মারধর করা হয়। বিএসএফ তাকে ফেরত দেওয়ার পর বিজিবির সদস্যরা তাকে ধানের জমিতে ফেলে রেখে চলে যান। আমার স্বামী কোনো দিন কোনো খারাপ কাজ করেনি। আমি হত্যার বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সফিউল্লাহ আরাফাত বলেন, মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞান অবস্থায় মুন্নাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ১০টা ২১ মিনিট সময়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            