সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আইন, বিচার ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনায় জেনেভায় বাংলাদেশ মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য জানায়।
জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়িতে করে জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান। গাড়ি থেকে নামার পর হঠাৎ একদল লোক এসে তাকে ঘিরে ধরে হেনস্তা করেন। এ সময় আসিফ নজরুলের সঙ্গে ছিলেন জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও মিশনের স্থানীয় কর্মী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত মিজান। কিন্তু এ সময় তারা দুজনই চুপ ছিলেন।
সেদিন বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশের পর এ ঘটনার সময় কামরুল ইসলামের নির্লিপ্ততার কারণ জানতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল। জবাবে কামরুল বলেন, ‘আপনি কথা বলছিলেন, তাই আমি চুপ ছিলাম।’
জেনেভায় আসিফ নজরুলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছে সরকার। সরকারের গুরত্বপূর্ণ উপদেষ্টাকে হেনস্তার ঘটনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টার সঙ্গে প্রটোকল থাকার পরও কেন এমন ঘটনা ঘটল এবং এর সঙ্গে কাদের যোগসাজশ রয়েছে তা জানতে চেয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
সদর দপ্তরের কূটনৈতিক পত্র পাওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে মাঠে নেমে পড়ে মিশন। ইতোমধ্যে তথ্য সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছে জেনেভার বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন। আওয়ামী লীগ আমলে জেনেভা মিশনে নিয়োগ পাওয়া একজন কর্মকর্তা এবং এক লোকাল স্টাফের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে প্রতিবেদন পেয়েছে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, মিশনের প্রতিবেদনের আলোকে লেবার কাউন্সেলর (জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস) মুহাম্মদ কামরুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া লোকাল স্টাফ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মচারী মিজানের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জেনেভায় আসিফ নজরুলকে হেনস্তার পর সম্প্রতি বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে জরুরি পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। সেই পরিপত্রে দুটি বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের বিদেশ সফরকালে যথাযথ প্রটোকল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ মিশনের কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।
গত ৭ নভেম্বর আসিফ নজরুলকে হেনস্তা করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল লোক আসিফ নজরুলকে ঘিরে ধরেন। তারা তার সঙ্গে উত্তেজিত ভাষায় তর্ক করছেন, বারবার প্রশ্ন করছেন, ‘আপনি মিথ্যা বলেছেন।’ ভিডিওতে শোনা যায়, আসিফ নজরুল বলছেন, ‘আপনি গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’ তখন হেনস্তাকারীদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            