খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে দেশব্যাপী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। উৎসবটি যাতে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপিত হয়, সে লক্ষ্যে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকেই সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি জাতীয় ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বাহিনীটি। বড়দিন উপলক্ষে সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুরুত্বপূর্ণ চার্চ, গির্জা ও উপাসনালয়গুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে নিয়মিত সুইপিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
মেট্রোপলিটন শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চার্চ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন, নিয়মিত টহল এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সম্ভাব্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আগাম তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ কার্যক্রমও চলছে।
এছাড়া র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম ভার্চুয়াল জগতে গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো রোধে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে কেউ অনলাইনে উসকানি দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বড়দিন উদ্যাপন কমিটির পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নারীদের ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তা, ভিআইপি, ধর্মযাজক এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি বনানী, গুলশান, উত্তরা, হাতিরঝিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, অভিজাত হোটেল ও ক্লাব, কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, বড়দিন উপলক্ষে পটকা, আতশবাজি ও আগুন দ্বারা পরিচালিত ফানুস উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হবে।
এদিকে র্যাব সদর দপ্তর থেকে একটি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে (হটলাইন: ০১৭৭৭৭২০০২৯) সারাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে। বড়দিনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে র্যাবকে জানাতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আমারবাঙলা/এসএ