অর্থায়ন বিল নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রম আংশিকভাবে শাটডাউন রয়েছে। ২০২৫ অর্থবছরের মেয়াদ শেষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১২টা ০১ মিনিটে (স্থানীয় সময়) অর্থায়নের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এর ফলে অপ্রয়োজনীয় খাতের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও জরুরি খাত যেমন সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের কাজ চালু থাকবে। তবে তারা আপাতত কোনো বেতন পাচ্ছেন না। খবর সিএনএনের।
১৯৮০ সালের পর এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ১৫তম শাটডাউন হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি ‘অনেক ফেডারেল কর্মীকে’ চাকরি থেকে বাদ দিতে পারেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘শাটডাউনের সময় আমরা এমন কিছু করতে পারব যা ডেমোক্র্যাটদের জন্য খারাপ এবং তারা তা উল্টাতে পারবে না। আমরা বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করতে পারি, তাদের পছন্দের কর্মসূচি বন্ধ করতে পারি। শাটডাউন থেকেও অনেক ভালো কিছু আসতে পারে।’
এ মন্তব্যে পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের হোয়াইট হাউসের আইনজীবী রিচার্ড পেইন্টার বলেন, ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি তার ‘চেনা শক্তি প্রদর্শনের কৌশল।’ তিনি বলেন, কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হলেও কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া নাগরিক সুরক্ষা আইনে সুরক্ষিত কর্মীদের ছাঁটাই সম্ভব নয়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বাজেট বিল নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে। রিপাবলিকানদের প্রস্তাবিত একটি অস্থায়ী বিল ডেমোক্র্যাটরা নাকচ করে দেয়, কারণ তাতে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের শর্ত ছিল না। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবিত বিল রিপাবলিকানরা আটকে দেয়, যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত অর্থায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে রিপাবলিকানদের প্রস্তাবিত বিল ৫৫-৪৫ ভোটে ব্যর্থ হয়। ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবও ৪৭-৫৩ ভোটে টিকতে পারেনি।
ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার অভিযোগ করেছেন, ‘রিপাবলিকানরা নিজেদের স্বাস্থ্যসেবা সংকট সমাধান না করে সরকারকে শাটডাউনে ঠেলে দিয়েছে।’ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফ্রিজ বলেন, ‘রিপাবলিকানরা ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ আমেরিকানদের ক্ষতি করছে।’
অন্যদিকে রিপাবলিকান সিনেট মেজরিটি লিডার জন থুন জানান, ‘সবকিছুই অপ্রয়োজনীয়ভাবে করা হলো কেবল ডেমোক্র্যাটদের রাজনৈতিক স্বার্থ মেটানোর জন্য।’
আমারবাঙলা/এফএইচ