বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয়েছে। জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় জিয়া উদ্যানে, যেখানে স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িতে করে খালেদা জিয়ার মরদেহ গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় নেওয়া হয়। সেখানে শোকাবহ পরিবেশে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পরিবারের সদস্য প্রিয় নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
পরে মরদেহটি গুলশান থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হয়। দুপুর ১২টার পর কফিনবাহী গাড়ি সেখানে পৌঁছায়। বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব আব্দুল মালেক।
জানাজায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অংশ নেন। এ সময় তিনি শোকসন্তপ্ত মানুষের কাছে তাঁর মায়ের জন্য দোয়া কামনা করেন এবং বলেন, আল্লাহ তাআলা যেন তাঁকে বেহেশত নসিব করেন। তিনি আরও জানান, মরহুমা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে কারো কোনো আর্থিক পাওনা থাকলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে। জীবনের কোনো সময়ে কারো প্রতি অনিচ্ছাকৃত আচরণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে সেজন্য ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি।
জানাজায় আরও অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরাও খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল নামে। অগণিত মানুষের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা জনস্রোতে পরিণত হয়। রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো শেষে তাঁকে সমাহিত করা হয় স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ইন্তেকাল করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ চোখের জলে প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানান।
আমারবাঙলা/এসএবি