উত্তর কোরিয়া কখনোই পারমাণবিক কর্মসূচী পরিত্যাগ করবে না, দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে একথা বলেছেন।
এটিকে ‘সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের অধিকার ছেড়ে দেওয়ার দাবি করার সমতুল্য’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৮ সালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক সফর করার পর থেকে এই প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব নেতাদের বার্ষিক অধিবেশনে বক্তৃতা রাখতে একজন কর্মকর্তাকে পাঠাল পিয়ংইয়ং।
অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে কিম বলেন, “ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ার (ডিপিআরকে) ওপর ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চাপিয়ে দেওয়া সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের অধিকার ছেড়ে দেওয়ার দাবি করার সমতুল্য এবং সংবিধান লঙ্ঘন। আমরা কখনোই সার্বভৌমত্ব ত্যাগ করবো না, অস্তিত্বের অধিকার ছাড়বো না এবং সংবিধান লঙ্ঘন করবো না।”
ভাষণে তিনি উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া ব্যবহার করেন।
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের হুমকির একটি সরাসরি অনুপাত হিসেবে আমাদের রাষ্ট্রের উন্নত যুদ্ধ প্রতিরোধককে ধন্যবাদ। শত্রু রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধ উস্কে দেওয়ার ইচ্ছা পুরোপুরি সামাল দেওয়া গেছে এবং কোরীয় উপদ্বীপে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি চলতি বছর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান।
জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আগের মেয়াদে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে তিনি যে প্রত্যক্ষ কূটনীতি অনুসরণ করেছিলেন তা পুনরুজ্জীবত করার বারবার আহ্বান সত্ত্বেও কিম তা অগ্রাহ্য করেন। ট্রাম্পের ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে অনুসরণ করা ওই কূটনীতি সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচী থামানোর কোনো চুক্তি করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
তবে গত সপ্তাহে কিম বলেছেন, ওয়াশিংটন যদি তার দেশকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করার জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা এড়ানোর আর কোনো কারণই থাকে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ত্যাগ করবে না উত্তর কোরিয়া।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা কখনোই পারমাণবিক ত্যাগ করবো না যা আমাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম শক্তি; পাশাপাশি অস্তিত্বের অধিকার। যে কোনো পরিস্থিতিতেই আমরা এই অবস্থান পরিবর্তন করবো না।”
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীকে ঘিরে ২০০৬ সাল থেকে দেশটির ওপর কঠোর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু উত্তর কোরিয়া এসব কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার দিন দিন নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হয়েছে।
আমারবাঙলা/এফএইচ