জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিল-এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নতুন কন্টিনজেন্ট লেবাননের উদ্দেশে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করেছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ৮৫ জন নৌসদস্য বিশেষ ফ্লাইটে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লেবাননের উদ্দেশে রওনা হয়। তারা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট ব্যানকন-১৬ এর অধীনে মোতায়েনকৃত যুদ্ধজাহাজ বানৌজা সংগ্রাম–এ যোগ দেবেন।
নৌসদস্যদের আনুষ্ঠানিক বিদায় জানান কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের পক্ষে চিফ স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন এম আশরাফুল আলম। বিদায় অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত ১৯ নভেম্বর ক্যাপ্টেন ফাহিদ আবদুল্লাহ্ নেতৃত্বে প্রথম গ্রুপের ২৫ সদস্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিশন এলাকায় রওনা দিয়েছে।
অন্যদিকে, আগামী ২৭ নভেম্বর ব্যানকন-১৫ এর ১১০ জন সদস্য মিশনে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফিরবেন, যা বাংলাদেশের ধারাবাহিক ও সফল শান্তিরক্ষা ভূমিকার এক নতুন অধ্যায়কে চিহ্নিত করবে।
মিশন-পূর্ব ব্রিফিংয়ে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা নৌসদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা বিশ্বমঞ্চে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন এবং শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়মিতভাবে ইউনিফিল মিশনে অংশ নিচ্ছে। ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সে উপমহাদেশের একমাত্র নৌবাহিনী হিসেবে বাংলাদেশের যুদ্ধজাহাজ অংশগ্রহণ করছে, যা দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।
বর্তমানে মোতায়েনকৃত বানৌজা সংগ্রাম লেবাননের জলসীমায়:-
অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করছে
সন্দেহজনক জাহাজ ও বিমান নজরদারি করছে
মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা করছে
দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে
লেবানিজ নৌসদস্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে
লেবাননে বসবাসরত বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করছে
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা আন্তরিকতা, শৃঙ্খলা, সাহস ও দক্ষতার মাধ্যমে মিশনে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাদের এই পরিশ্রম শুধুমাত্র মিশনের স্বার্থে নয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও সম্মানজনক করেছে।
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবদান বিশ্বমঞ্চে সমাদৃত। নতুন কন্টিনজেন্টের অংশগ্রহণ সেই ধারাবাহিক সাফল্যকে আরও শক্তিশালী করবে, যা জাতির জন্য গর্বের বিষয়।
আমারবাঙলা/এসএ