কুমিল্লা বিসিকে সেমাই তৈরি করে খন্দকার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে কাজের ব্যস্ততা দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ঢুকার আগে সিঁড়িতেই ভাজা সেমাইয়ের ম-ম গন্ধ পাওয়া যায়। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খাড়িতে থরে থরে সাজানো ভাজা মচমচে লাচ্ছা সেমাই। সেমাইয়ের বড় বড় খাড়ির নিচে পড়ছে তেলের অবশিষ্টাংশ। পাশেই সেমাই মেপে মেপে তা বাজারের জন্য প্রস্তুত করছেন মাথায় সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মুখে মাস্ক পরা একদল পুরুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব মুখরোচক সেমাইয়ের অধিকাংশ এক-দুদিনের মাঝে চলে যাবে দেশের সীমানা পেরিয়ে ভারত ও মালয়েশিয়ায়। এ ছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিক্রি হবে দেশের স্থানীয় বাজারগুলোতে।
জানা গেছে, কুমিল্লা নগরের ঠাকুরপাড়া ও অশোকতলা লাগোয়া বিসিক শিল্পনগরী। ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে শিল্পনগরীতে। বিশেষ করে খন্দকার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজে। দিন রাত কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। অন্যসব কারখানা থেকে এখানকার সেমাইয়ে মালিক ও রপ্তানিকারকদের রয়েছে বাড়তি নজর। এর কারণ এই কারখানা থেকে সেমাই স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি যাচ্ছে দেশের বাইরেও। তৈরি হচ্ছে নতুন বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের খাত। কুমিল্লা বিসিকের এটিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা দেশের বাইরে সেমাই রপ্তানি করে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখা গেছে, নিচতলায় চলছে বিস্কুট ও চানাচুর তৈরির কাজ। চার তলায় বড় চুল্লিতে ভাজা হয় লাচ্ছা সেমাইয়ের গোল্লা। এরপর তা ভাজা শেষে রাখা হয় তেল ঝরার জন্য। একদিকে তেল ঝরছে অন্যদিকে প্যাকেটিং প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মো. ফিরোজ খন্দকার বলেন, ‘আমরা ২০২২ সাল থেকে দেশের বাইরে বিস্কুট ও চানাচুরসহ বিভিন্ন প্রোডাক্ট রপ্তানি করছি। ২০২৩ সাল থেকে ভারতে ও পরে মালয়েশিয়ায় সেমাই রপ্তানি করছি। আমরা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মালয়েশিয়া, বিবির বাজার দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা ও গোয়াইনঘাট দিয়ে ভারতের আসামে রপ্তানি করছি। এ বছর আমরা ভারতে এক লাখ ডলার ও মালয়েশিয়ায় ২০ হাজার ডলারের সেমাই রপ্তানি করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সারা বছর সেমাই উৎপাদন বন্ধ থাকে। শুধু রমজানের আগের ১৫ দিন থেকে মোট ৪৫ দিন পর্যন্ত সেমাই উৎপাদন হয়। এরপর বছরের বাকি সময় বন্ধ থাকে উৎপাদন। এই সময়ে আমাদের ৩০ থেকে ৩২ জন লোক কাজ করে।’
ফিরোজ খন্দকার বলেন, ‘সামনের বছর আমাদের রপ্তানি বাড়বে। কারণ, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে সামনের বছর থেকে রপ্তানি করবো। আমাদের সব আলোচনা শেষ। ইউরোপসহ অন্যান্য দেশেও রপ্তানির কথা ভাবছি। কথাও আগাচ্ছি।’
কুমিল্লা বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘বিসিক থেকে প্রথম খন্দকার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছে। তাদের খাবারের মান বিশ্ব দরবারে পাল্লা দেওয়ার মতো করেই তৈরি করা। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা (খন্দকার ফুড) সরকারি সুবিধা চেয়েছিল। ২০১১ সাল থেকে তারা এখানে উৎপাদনে আছে। তাদের সকল মান ও পরিকল্পনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাগ্রো প্রসেসে আবেদন করেছিল সহযোগিতার জন্য। আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পাশে আছে। ঋণ সহযোগিতা থেকে যা যা দরকার তারা করছে। তারা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের মাধ্যমে জাতীয় রিজার্ভে ভূমিকা রাখছে। তাদের ১০ শতাংশ ভর্তুকিও দিচ্ছে সরকার।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            