মাছ ধরা দেখার আগ্রহ থেকে বাবার সঙ্গে সাগরে গিয়েছিল ১২ বছরের শিশু সিয়াম। কিন্তু আনন্দের সেই যাত্রাই শেষ পর্যন্ত পরিণত হয় মর্মান্তিক ট্র্যাজেডিতে। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় বাবা শামীম ও তার শিশু সন্তান সিয়ামের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত শামীম উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা বাঁধঘাট এলাকার বাসিন্দা এবং ট্রলার মালিক মো. সিদ্দিক জোমাদ্দারের ছেলে। তার ছেলে সিয়াম চরগঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহত শামীমের বাবা মো. সিদ্দিক জোমাদ্দার জানান, গত ২১ ডিসেম্বর চরগঙ্গা বাঁধঘাট বাজার এলাকা থেকে নিজস্ব ট্রলারে করে শামীম, তার ছেলে সিয়ামসহ মোট আটজন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে রওনা দেন। টানা দুই দিন মাছ শিকারের পর বুধবার রাতে ট্রলারটি পাইপ বয়া এলাকায় নোঙর করা হয়। এ সময় হঠাৎ ঝড়ো বাতাস শুরু হলে ট্রলারের নিচের অংশে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রলারটি কাত হয়ে সাগরে ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার মুহূর্তে শামীম ও তার ছেলে সিয়াম ট্রলারের ভেতরেই আটকা পড়েন। ট্রলারের ওপর থাকা বাকি চারজন কোনোভাবে ভাসমান অংশ ধরে সাগরে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার বেশি সময় ভেসে থাকেন। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে কাছাকাছি অবস্থানরত একটি ট্রলার ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের জীবিত উদ্ধার করে। তবে ট্রলারের ভেতরে আটকা পড়া শামীম ও তার শিশু সন্তান তখনই প্রাণ হারান।
পরে বৃহস্পতিবার রাতেই ডুবে যাওয়া ট্রলারের ভেতর থেকে শামীমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোস্টগার্ড ট্রলারডুবির স্থান থেকে শিশু সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করে। দুপুর আড়াইটার দিকে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নৌপুলিশ তদন্ত করছে।
আমারবাঙলা/এসএবি