জয়পুরহাটের কালাইয়ে পুষ্টি ও ওষধি গুণাগুণে ভরপুর সজনা বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। এই উপজেলায় গাছে গাছে শোভা পাওয়া নান্দনিক সাদা সজনে ফুলের শোভায় মগ্ন ভ্রমর গুঞ্জনে। ফুলগুলো নিজেকে ডাঁটায় পরিপূর্ণ করার প্রতিযোগিতায় যেন ব্যস্ত সময় পার করছে। চলতি মৌসুমে প্রতিটি সজনে গাছের শাখা-প্রশাখা নুয়ে পড়ছে ফুলের ভারে। শ্বেত-শুভ্রতায় সোনা-ধোয়া রঙের পরশে সজনে ফুল দোল খায় ফাগুনের মাতাল হাওয়ায়। সেই দোলা ছুঁয়ে যায় পথচারীর হৃদয়েও। ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির গুঞ্জন, বসন্ত বাতাসে ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আকৃষ্ট করছে পথিককেও। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সজনার ভালো ফলন আশা করছে চাষি ও কালাই উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সরেজমিনে ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই পৌরসভা সহ উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ওই পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ১২৫ হেক্টর জমিতে অকৃষি বা পতিত জমিতে বারোমাসি ও সিজনাল দেশী জাতের সজনার চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারোমাসি সজনার চাষ হচ্ছে ২৫ হেক্টর এবং সিজনাল বা দেশী জাতের সজনার চাষ হচ্ছে ১০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন ধরা করা হচ্ছে।
এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে, বাসাবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে, স্কুল-কলেজ মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আশঁজাতিয় সবজি সজনার সারি সারি গাছগুলোতে এখন ফুলের শোভা পাচ্ছে। উপজেলাতে প্রতিবছরে সজনা চাষ বেড়েই যাচ্ছে।
তবে প্রাকৃতির কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা। উপজেলার মাত্রাই ইউনয়নে বিয়ালা গ্রামের সজনা চাষি জাকারিয়া মবলেন, বাড়ির সমনে রাস্তার ধারে প্রায় ১০টি সজনার গাছ আছে। গত বছরে ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ১২ মণ সজনা পেয়েছি। আশা করছি, এবারও সজনার বাম্পার ফলন হবে। একই ইউনিয়নের বলিগ্রামের সুভাষ দত্ত বলেন, আমার ১০ শতক পতিত জমি আছে সেখানে তেমন কোন ফসল ফলেনা। সেখানে আমি বাণিজ্যিক ভাবে বারোমাসি ও সিজনাল দেশী জাতের সজনা চাষ করেছি। আমার ওইসব সজনে গাছে ফুল ভালো এসেছে। প্রতি বছর ঐসব গাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার সজনে বিক্রি হয়। তবে আবহাওয়ার ভালো থাকলে এবারও ভালো ফনল পাব।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সজনা একটি পরিবেশ বান্ধব সবজি। এটি অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। এটি রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও তেমন নেই। সজিনায় সব ধরনের খনিজ পদার্থ রয়েছে। সজিনার পাতা, ফুল, ফল, বাকল ও শিকড় সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। তবে, একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            