বাণিজ্য ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার সূচকের পতন হলেও বিগত দুই কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত সোমবারের মতো মঙ্গলবারেও (২৩ জানুয়ারি) ডিএসইতে সূচক উত্থানে লেনদেন সমাপ্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। আগের কার্যদিবসের চেয়ে এদিন লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও কমেছে বাজারে মূলধনের পরিমাণ।
ডিএসই ওয়েবসাইট অনুসন্ধান করে দেখা যায়, শেয়ার বিক্রির চাপে গতকাল ডিএসইর লেনদেন শুরুতেই সূচকের পতন হয়। লেনদেন শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৮ পয়েন্ট পতন হয়। পরে সেই পতন বৃত্ত কমতে থাকে। প্রথম পাঁচ মিনিটে লেনদেনে পতন হয় ২৫ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার পর সেই পতন ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয়। প্রথম এক ঘণ্টা ১৮ মিনিট বা বেলা ১১টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত লেনদেনে ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৫ পয়েন্ট। সেখান থেকে সূচক বাড়ার বৃত্ত কমতে থাকে। দিনশেষে ডিএসইএক্স বেড়েছে ২২ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় অনেকে এতোদিন শেয়ার বিক্রি করতে পারেনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা গত রোববার থেকে কার্যকর হয়। ওইদিন অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির দিকে ঝুঁকে পড়েন। অনেকে লসে শেয়ার বিক্রি করেন। এতে ডিএসইতে বিক্রির চাপ অনেক বাড়ে। ওইদিন তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর পতন ঘটে। সেই চিত্র গত দুই কর্মদিবস লেনদেনের শুরুতে ছিল। লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিট পর সেই অবস্থান ঘুরে দাঁড়ায়। এতে ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয় ডিএসই।
গত সোমবারের মতো মঙ্গলবারেও শেয়ার কেনার চাপ বৃদ্ধি পায়। ফলে দুই শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। লেনদেন ১১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা গত ১৫৬ কর্মদিবসের মধ্যে সেরা লেনদেন এটি।
স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট সূত্রে, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর আগে গত বছরের ৫ জুন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এদিন পুঁজিবাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৬৯ হাজার ৫ কোটি ৯৪ টাকা। আগের কার্যদিবস সোমবার বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৭৩ হাজার ২৭৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার।
সূচক ডিএসইএক্স ২১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৭৬ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক তিন দশমিক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৮৪ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। এ ছাড়া ডিএস৩০ সূচক ১০ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৫৮ দশমিক ১৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে এদিনে লেনদেন হওয়া ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬টির ও কমেছে ২২৭টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ৪০টির।
মঙ্গলবার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেন শীর্ষ উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা, দেশবন্ধু পলিমারের ২৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ২৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, বিডি থাইয়ের ২৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা, রূপালী ব্যাংকের ২৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্সের ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং ফু-ওয়াং ফুডের ১৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
এদিকে, করোনার প্রকোপ ও শেয়ারবাজারে লাগাতার পতনের কারণে পুঁজিবাজারে প্রথমবার ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পরে তা ২০২১ সালের জুলাইয়ে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ফের গত ২০২২ সালের জুলাইয়ে পুঁজিবাজারের স্বার্থে প্রায় দুই শতাধিক কোম্পানি ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল বিএসইসি। এতে এক পর্যায়ে শেয়ার লেনদেন ব্যাপক কমে গেলে সমালোচনায় পড়ে বিএসইসি। পরে গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির ওপরে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় ।
তবে, তখনও ফ্লোর প্রাইসে আটকে রেখেছিল ৩৫ কোম্পানি। যা গত রোববার থেকে কার্যকর হয়েছিল। পরে সব বিবেচনায় গত সোমবার আরও ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বিএসইসি। সেই হিসেবে আজ থেকে ১২ কোম্পানির শেয়ার দরে ফ্লোর প্রাইস বহাল কার্যকর ছিল। যেসব কোম্পানিগুলোতে ফ্লোর প্রাইস থাকছে, সেগুলো হলো— গ্রামীণফোন, রবি, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, রেনাটা, ইসলামী ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো, শাহজিবাজার পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ও বিএসআরএম।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            