সংবাদ পরিবেশনে গাজা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ট্রান্সজেন্ডার অধিকারসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল ইস্যুতে ‘গুরুতর ও পদ্ধতিগত পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ ওঠার পর বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি পদত্যাগ করেছেন। তার সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন বিবিসি নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেবোরাহ টারনেস।
এই অভিযোগ তোলেন বিবিসির এডিটরিয়াল গাইডলাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস কমিটির (ইজিএসসি) সাবেক পরামর্শক মাইকেল প্রেসকট। অভিযোগে বলা হয়, বিবিসি সংবাদে সম্পাদকীয় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথ্য উপস্থাপন করেছে।
এর মধ্যে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ এক নথি ফাঁস করে। সেই নথিতে দেখা যায়, বিবিসির তথ্যচিত্র প্যানোরামা-তে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বক্তব্য সম্পাদনা করে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, যাতে মনে হয় তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলে সহিংসতার জন্য সমর্থকদের উৎসাহ দেন।
ট্রাম্প বলেন, আমরা ক্যাপিটলের দিকে যাচ্ছি এবং আমি সেখানে আপনাদের সঙ্গে থাকব… আমরা লড়াই করব।
কিন্তু মধ্যবর্তী কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাক্য বাদ দিয়ে সেগুলো জোড়া লাগানো হয়, এমন অভিযোগ উঠে।
ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বিবিসিকে আক্রমণ করে বলেন, বিবিসি হলো শতভাগ ভুয়া খবর দেয়, এটি একটি অপপ্রচারযন্ত্র।
চাপের মুখে রবিবার টিম ডেভি এক বিবৃতিতে বলেন, কিছু ভুল হয়েছে এবং মহাপরিচালক হিসেবে সেই দায়ভার আমার। একইভাবে ডেবোরাহ টারনেস বলেন, চূড়ান্তভাবে এই দায় আমার। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
পদত্যাগের খবর প্রকাশের পরও ক্যারোলিন লেভিট থেমে থাকেননি। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে টিম ডেভির পদত্যাগের সংবাদসহ শেয়ার করেন টেলিগ্রাফ-এর আরেক প্রতিবেদনের শিরোনামটি ঘিরে আবারও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিবিসি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করবে কি না তা স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে এই পদত্যাগ ব্রিটিশ গণমাধ্যমজগতে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আমারবাঙলা/এফএইচ