সমুদ্রসম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সামুদ্রিক কর্মকাণ্ডকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও কার্যকরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামে বানৌজা ঈসা খানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং দেশের বিভিন্ন মেরিটাইম সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।
সভায় সমুদ্র জরিপ কার্যক্রমে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। আলোচনায় সমুদ্র জরিপ, অফশোর স্থাপনা, সামুদ্রিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ, মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বন্দর উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, তথ্য বিনিময় ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার বিষয় উঠে আসে। পাশাপাশি মেরিটাইম স্পেশাল ডেটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার (MSDI) এবং মেরিটাইম স্পেশাল প্ল্যানিং (MSP) প্রণয়নের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় জানানো হয়, সমুদ্রগামী জাহাজের নিরাপদ নেভিগেশন নিশ্চিত করা এবং সামুদ্রিক অর্থনীতির বিকাশে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সেইফটি অব লাইফ অ্যাট সি (SOLAS) কনভেনশনের আলোকে উপকূলীয় দেশগুলোর জন্য যথাযথ হাইড্রোগ্রাফিক সেবা ও নটিক্যাল চার্টিং নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক। এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১৯৮৩ সালে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস চালু করে।
বাংলাদেশ ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা (IHO)-এর সদস্যপদ অর্জন করে। একই বছর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ২৫টি মেরিটাইম ও সহযোগী সংস্থা এ কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করছে।
দুই দিনের এ আয়োজনের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক অ্যান্ড ওশানোগ্রাফিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন। পাশাপাশি নৌবাহিনীর সার্ভে জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্রে পরিচালিত হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ থাকছে।
সভাপতির বক্তব্যে রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতা ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে হাইড্রোগ্রাফি ও সমুদ্রবিজ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবন জোরদার করা সম্ভব। এর ফলে দেশের সমুদ্র অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২০২৫–২০২৭ মেয়াদে নর্থ ইন্ডিয়ান ওশান হাইড্রোগ্রাফিক কমিশন (NIOHC)-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। এ দায়িত্ব লাভকে বাংলাদেশের সামুদ্রিক সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আমারবাঙলা/এনইউআ