উচ্চপ্রু মারমা : রাঙামাটির রাজস্থলীর তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক সেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বহীন আচরণের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ঘটেছে এমন এই ঘটনা, যা স্থানীয় অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার সময়, যখন সূর্য তীব্র তাপ ছড়াচ্ছে এবং প্রচণ্ড গরমে বাইরে দাঁড়ানোই কঠিন হয়ে যায়, তখন ফুটবল খেলতে বাধ্য করা হয়। এই সময়ে মাঠে খেলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে হিটস্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতি থেকে সহজেই অনুমান করা যায়—একটি প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। অথচ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার প্রতি সামান্যতম খেয়ালও রাখেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক। বিদ্যালয়ের মূল দায়িত্ব হলো মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা। খেলাধুলা শিক্ষার একটি পরিপূরক অংশ হলেও সেটি কখনোই শিক্ষার বিকল্প হতে পারে না। কিন্তু তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন যেন উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে—খেলাধুলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে লেখাপড়াকে পিছনে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ করে , বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। শিক্ষকদের পাঠদানের চেয়ে নানা আয়োজন এবং খেলার প্রতি বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান দিন দিন নিম্নগামী হচ্ছে, অথচ কর্তৃপক্ষ উদাসীন।
একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—আমরা সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়তে বিদ্যালয়ে পাঠাই। কিন্তু সেখানে যখন লেখাপড়ার চেয়ে খেলা-ধুলায় জোর দেওয়া হয়, তখন আমাদের মতো সাধারণ অভিভাবকদের হতাশ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। দুপুরের প্রচণ্ড গরমে ছোট ছোট বাচ্চাদের মাঠে নামানো মানে তাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা।”
তারা আরও বলেন,“এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদ উল্যাহকে নিতে হবে। আমরা তার দায়িত্বহীনতা ও সেচ্ছাচারিতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে তাকে প্রত্যাহারের জোর দাবি করছি।”
এ বিষয়ে জানতে রাজস্থলী তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমদাদুল হককে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি,ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
বিলাইছড়ি ও রাজস্থলী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুল হক এ বিষয়ে বলেন, “আমি বিষয়টি প্রথমে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকেই শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাই এ অভিযোগ বা সমস্যাটি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় অভিভাবকরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে দ্রুত প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ একজন প্রধান শিক্ষকের সঠিক নেতৃত্ব না থাকলে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে।
আমার বাঙলা/আরএ