এক সময় ভাঙা ঝুপড়ি ঘরই ছিল ফুলেশ্বর চাকমার একমাত্র আশ্রয়। বয়সের ভার, দারিদ্র্যের কঠিন চক্র, আর সরকারি সহায়তার অভাবে কেটেছে তাদের জীবনের অনেক বছর। কিন্তু স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে বদলে দিল তাদের জীবন। স্থানীয়রা তৎপর হওয়ার পর তার অসহায় জীবনের খবর পৌঁছে যায় জোন কমান্ডারের কাছে। জোন কমান্ডার ও তার চৌকস কর্মকর্তা সহ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে শুরু হয় নতুন ঘর নির্মাণের কাজ।
অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান! আজ (২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার ২০২৫) দুপুরে রাঙ্গামাটি রিজিয়নের কাপ্তাই ১০ আরই ব্যাটালিয়ন এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম সাদিক শাহরিয়ার ও অন্যান্য সেনা অফিসারের উপস্থিতিতে ফুলেশ্বর চাকমার নতুন ঘরের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
ঘর হস্তান্তরকালে কাপ্তাই ১০ আর ই ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম সাদিক শাহরিয়ার বলেন, আমরা তাদের এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পারি এই অসহায় পরিবারের দুরবস্থার কথা। এরপর সেনাবাহিনীর প্রধানের দিক নির্দেশনায় দুই নং মগবান ইউনিয়নের অর্ন্তগত দুই নং ওয়ার্ড দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ফুলেশ্বর চাকমার জন্য আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেই এবং আজ তার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে পেরেছি।
নতুন ঘর পেয়ে আনন্দিত ফুলেশ্বর চাকমা বলেন, আগে তো আমার ঘর নাই, এখন তো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাপ্তাই জীবতলি জোন অধিনায়ক ঘর দিয়েছে, এখন সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো। আগে তো ভাঙা ঘরে থাকতাম, এখন ঘর পেয়ে খুব ভালো লাগতেছে।
স্থানীয়রা এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা আরো বলেন, সেনাবাহিনী কে বিষয়টি তুলে না ধরলে হয়তো এভাবে দ্রুত সমাধান হতো না। আমরা সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই, তারা অসহায় হতদরিদ্রের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটি শুধু একটি ঘর নয়, এটি স্বপ্ন পূরণের গল্প। এটি প্রমাণ করে মানবিক সহযোগিতা এবং সমাজের শক্তি সমাজ পরিবর্তন করতে পারে। রাঙ্গামাটি সেনাবাহিনী রিজিয়নের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হয়েছে—এই অঞ্চলের কেউ গৃহহীন থাকবে না, কেউ না খেয়ে থাকবে না। আর আজকের এই কাজ সেই অঙ্গীকারের বাস্তব রূপ।
অসহায় বৃদ্ধ ফুলেশ্বর চাকমার মুখে এখন হাসি, কারণ তাদের মাথার উপর এখন একটি নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে। সেনাবাহিনীর এই মহৎ উদ্যোগ সমাজে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দেবে।