উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষমতাকে পাঁচ বছরের জন্য প্রলম্বিত করতে চান বলে মন্তব্য করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখ্য আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদি। শনিবার (২৪ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
হাদি বলেন, ‘সংকটকালীন সময়ে পড়ে গেছি আমরা। রাষ্ট্রের কোনো সঠিক তথ্য নেই। জাতির এই মুহূর্তে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল সবকিছু জানা স্বত্ত্বেও প্রকাশ করছে না। বড় কথা হলো দেশে অনেকগুলো আন্দোলন হয়েছে, তখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেননি পদত্যাগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস আপনি চাইলেই পদত্যাগ করতে পারবেন না। আপনাকে বসিয়েছে যারা, আপনাকে ছাড়তেও বলবে তারা। সবাই ইউনূসের হাতকে শক্তিশালী করেন, অতি পাকনা উপদেষ্টাদের দফতরবিহীন করেন।’
মঞ্চের মুখ্য আহ্বায়ক বলেন, ‘যতক্ষণ না পর্যন্ত জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি হয় ততক্ষণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয় নাই। জুলাই ঘোষণাপত্রকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে। দিল্লির নৈতিক পতন হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের করিডর নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর প্রধান যে বক্তব্য টা দিলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। বর্তমান সরকার এবং সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। আপনারা বিগত সরকারের গুম, খুন সম্পর্কে জানতেন, কিন্তু চুপ থেকেছেন। তবে জুলাইয়ের অংশীদারিত্ব আমরা অস্বীকার করবো না।’
উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষমতাকে পাঁচ বছরের জন্য প্রলম্বিত করতে চান মন্তব্য করে হাদি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে অনেক উপদেষ্টা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারের কাজ ছিল জুলাই হত্যার বিচার, মৌলিক সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন সংস্কার এবং নির্বাচন দেয়া। এর বাইরে অন্য কাজ আপনি (ড. ইউনূস) কেন করবেন।’
ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘দিল্লির ফাঁদে পা দিয়ে দেশ যদি ক্ষমতা হারায় এর জন্য দায়ী থাকবে রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে যতগুলো কথা বলেছে সেগুলো যুক্তিসঙ্গত কিন্তু তারা এটা বোঝে না সেনাবাহিনীর একটা অংশ ক্ষমতায় যেতে চায়। বিএনপির উচিত ছিল জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্রের স্টেক নেয়া। বিএনপি জুলাই সংস্কার, ঘোষণাপত্র নিয়ে কেনো কথা বলে না। শুধু নির্বাচন নিয়ে কথা বলে, কারণ তারা দিল্লির ছকে পা দিয়েছে।’
ছাত্র উপদেষ্টারা পদত্যাগ করলে এই সরকারের আর এক মিনিটও বৈধতা থাকবে না উল্লেখ করে হাদি বলেন, ‘ছাত্র উপদেষ্টাদের বিপক্ষে বিএনপি বিভিন্ন কথা বলে। কিন্তু বিএনপির এমন একজন উপদেষ্টা রয়েছেন, যিনি স্যূটকেস গুছিয়ে বসে আছেন ড. ইউনূস ক্ষমতা ছাড়লে প্রধান উপদেষ্টা হবেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অপরাধ জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তাদের অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। যে ছেলেটার গায়ে আঘাতের চিহ্ন, মাত্র ১০ মাসে তিনি কীভাবে কোটি টাকার মালিক! এই ঐক্য নষ্ট করেছে এনসিপি। মন চাইলেই পোস্ট দেয় আবার ২ মিনিট পর ডিলিট দেয়। বিবেকের মধ্যে থাকেন, বিবেককে কখনো বর্গা দিয়েন না।’
আমারবাঙলা/জিজি