কেপি শর্মা ওলি সরকারের দুর্নীতি এবং ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নেপালজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশাল জনতার এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে 'জেনারেল জেড' তরুণরা।
অনলাইনে তীব্র সরকারবিরোধী মন্তব্যের ঝড় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাজপথে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনের কাছে পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে পাঁচজন বিক্ষোভকারী নিহত এবং ৮০ জনেরও বেশি আহত হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভোর থেকেই পরিস্থিতি ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠছে। রাজধানীর অনেক স্থানে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভ করে ছাত্ররা। সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করলে পুলিশ একাধিক স্থানে গুলি চালায়। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ রাজধানীতে কারফিউ জারি করে।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভের মাঝে গত ৪ সেপ্টেম্বর ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্লক করে সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে 'জেন-জি' নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর এবং ভিন্নমত দমন করার লক্ষ্যে সেন্সরশিপের একটি প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা সত্ত্বেও তরুণরা টিকটক এবং রেডিটের মতো বিকল্প প্ল্যাটফর্মগুলোতে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়। এরপরই হাজার হাজার তরুণ বিক্ষোভকারী সরকার এবং তার নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে রাজপথে সমবেত হয়।
সোমবার বিক্ষোভকালে অনলাইনে প্রচারিত ভিডিও এবং ছবিতে দেখা গেছে, অনেক আন্দোলনকারী স্কুল ও কলেজের পোশাক পরে মিছিলে যোগ দিয়েছে। তারা পুলিশের দিকে ডালপালা এবং পানির বোতল নিক্ষেপ করছে। তাদের হাতে ছিল 'স্বাধীন কণ্ঠস্বর আমাদের অধিকার' এবং 'করদাতাদের টাকা কোথায় গেল?' স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি অনিবন্ধিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-এর এক সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ওলি বলেন, 'মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির চাকরি হারানোর চেয়ে জাতির স্বাধীনতা অনেক বড়। আইন অমান্য করা, সংবিধানকে অবজ্ঞা করা এবং জাতীয় মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে অসম্মান করা গ্রহণযোগ্য নয়।'
আমারবাঙলা/জিজি