বাণিজ্য

মৎস্য রপ্তানিতে ই-ট্রেসিবিলিটি চালু হলে বাড়বে বৈদেশিক আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের মৎস্য রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে ই-ট্রেসিবিলিটি প্রযুক্তি। সংশ্লিষ্টদের মতে, এই ডিজিটাল পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে দেশের মাছ রপ্তানিতে স্বচ্ছতা আসবে, বাড়বে বৈদেশিক ক্রেতাদের আস্থা ও আয়।

বর্তমানে দেশে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকায় এই আয় আরও বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে মৎস্য উৎপাদন ও বিপণনের প্রতিটি ধাপকে ডিজিটালভাবে রেকর্ড ও পর্যবেক্ষণ করতে ই-ট্রেসিবিলিটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

এ বিষয়ে ল্যাবএইড গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ল্যাবএইড এগ্রোজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীম বলেন, `ই-ট্রেসিবিলিটি কেবল একটি প্রযুক্তি নয়, বরং এটি বাংলাদেশের মৎস্য খাতের ভবিষ্যৎ। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও দৃঢ় হবে।'

ই-ট্রেসিবিলিটি পদ্ধতিতে মাছের পোনা সংগ্রহ, খামারে পরিচর্যা, খাদ্য সরবরাহ, রোগ প্রতিরোধ, আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং ও পরিবহন—প্রতিটি ধাপ ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত থাকে। একটি বারকোড বা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট সব তথ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাজারে রপ্তানি করতে হলে পণ্যের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত থাকা জরুরি। সেখানে ই-ট্রেসিবিলিটি বাধ্যতামূলক না হলেও ব্যাপকভাবে মূল্যায়িত হয়। ফলে এটি চালু হলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা বাড়বে।

বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাত—যেমন টুনা, রূপচাঁদা, লইট্টা ও চিংড়ির বাজার সম্প্রসারণেও এই প্রযুক্তির ভূমিকা থাকতে পারে। ট্রলারের নাম, মাছ ধরার স্থান, প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র—সব তথ্য ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত থাকলে তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সহজেই যাচাইযোগ্য হবে।

তবে ই-ট্রেসিবিলিটি বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খামারিদের প্রশিক্ষণের অভাব, প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর ঘাটতি এবং প্রাথমিক বিনিয়োগ। এজন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP) মডেলে কাজ করাকে কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রথম ধাপে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু নির্বাচিত খামার ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রকে এই ব্যবস্থায় আনার সুপারিশ করেছেন সাকিফ শামীম। পাশাপাশি, সহজ ও ব্যবহারবান্ধব সফটওয়্যার ও মোবাইল অ্যাপ চালুর ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, `ই-ট্রেসিবিলিটির মাধ্যমে শুধু রপ্তানি বাড়বে না, বরং দেশের খামারিরাও ডিজিটালভাবে তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্নত করতে পারবেন। এতে করে সাপ্লাই চেইনে স্বচ্ছতা আসবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের ওপর নির্ভরতা কমবে।'

সরকার ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করলে মৎস্য রপ্তানি খাতে ই-ট্রেসিবিলিটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আমারবাঙলা/এফএইচ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

চট্টগ্রামে যুবদলের সেই এমদাদুল হক বাদশা'র বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার বহিষ্কার আদেশ প্র...

কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে সচিব

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদ...

শীতের দাপটে কাঁপছে চায়ের জনপদ শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজারে শুরু হয়ে গেছে শীতের দাপট। ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহেই ঘন কুয়াশা আর হিম...

সিএমপির ১৫ থানায় ওসিদের বড় রদবদল

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) ১৫ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পদে ব্...

লন্ডন নেওয়া হবে কি না সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ রাতে

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্ন...

গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে কুলাউড়ায় মশাল মিছিল ও সমাবেশ

গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে লালদিয়া পান...

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৃষি জমিতে চাষ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে একাধিক কৃষকের মালিকানাধীন...

চট্টগ্রামে যুবদলের সেই এমদাদুল হক বাদশা'র বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার বহিষ্কার আদেশ প্র...

চট্টগ্রামে ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজারের বদরউদ্দিন মার্কেটের এস কে ট্রেডার্সের মালিক, বিশি...

বিদেশ থেকে চিনি আমদানি বন্ধ: শিল্প উপদেষ্টা

দেশের চিনিকলে উৎপাদিত চিনি আগে বিক্রি হবে বলে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা