টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার ৭ নং আলোকদিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড দিগরবাইদের আনোয়ার হোসেন, (আনোয়ার ডাকাত) তিনি ডাকাতি, হত্যাসহ কয়েকটি মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আনোয়ার মেম্বার পদবী ধারন করেন। তার বাড়িতে ছিল মাটির ঘর। জমিতে চাষির কাজ ও চুরি ডাকাতিতে সহোযোগিতা করে কোন মতে দিন চলতো। আনোয়ার হোসেনকে সাহায্য করত তাতো মেয়ে আমিনা জান্নাত(রাত্রি)। সে ইয়াবা ও হানিট্রাপের কারবার করতো। আমিনা টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে যুকদের বাসায় ডেকে এনে ট্রাপে ফেলে সর্বসাত্ন করতো।
ভুক্তভোগী গেন্ডা এলাকার রুবেল, সুমন ও সবুজ জানান, এই চক্রের সঙ্গে মধুপুরের জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন প্রতারক ও পতিত আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শেখ রাসেল ও শিপুর ছত্রছায়ায় আমিনা জান্নাত এই অপকর্ম চালিয়ে গেছে । ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি ‘দৈনিক বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে তার সত্যতা রয়েছে ও সাভার থানায় দায়ের হওয়া মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই মামলায় কয়েকজন এখনো জেলে রয়েছেন।
গেন্ডার এলাকাবাসী বলেন, একটা খরাপ মেয়ের চক্রে পরে কেন নিরপরাধ যুবকরা জেল খাটবেন? এদেরকে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করা হোক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জান্নাতের এক বান্ধবী জানান- রাত্রী জান্নাতের এসব অপকর্মের সঙ্গে তার পরিবার জড়িত। তাদের ও মধুপুরে কতিপয় যুবকদের সহোযোগিতায় এখোনো কসমেটিক ও পার্লারের অন্তরালে তার নিজের ভাড়া করা ও সহোযোগিদের বাসায় ইয়াবা ব্যাবসা ও সেবনসহ অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই চক্রটি ভারতে নারী পাচারসহ অনলাইনে মাদক ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত।
উল্লেখ্য, আনোয়ার হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় তাদের জীবনযাত্রা।
আনোয়ার মেম্বার বিভিন্ন সরকারি কাজের অর্থ আত্মসাৎ করে বৈধ আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। আনোয়ার হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিলেন। ফ্যাসিবাদের পতনের পরে সে খোলস পাল্টিয়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখছেন।
নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য তার বাড়ি তৈরী করেন টিন দিয়ে ফ্লোর পাকা করে। আনোয়ার হোসেন বিনিয়োগ করে, দিনমজুর ছেলেকে দিয়ে সুদের ব্যাবসা চালু করেন। ‘মধুবাংলা ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী সমবায় সমিতি’ নামে ২০২২ সালে ১৬ আগস্ট নিবন্ধন নং-৮৮ একটি সমিতি খোলেন। সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিয়ে মাল্টিপারপাস বা চড়া সুদের ব্যাবসা সম্পুর্ন অবৈধ হলেও আনোয়ার মেম্বারের ভয়ে ও কিছু অসাধু উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাদের মনিটরিং ও অবহেলার কারনে নিয়ম নিতি পালন না করেই চালাচ্ছে দৈনিকভিত্তিতে সুদের ব্যাবসা।
এখন এই সমিতির মুলধন প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা। অবাক করা বিষয় হলো, সমিতির অনেক সদস্য জানেনা তারা মধুবাংলা সমিতিতে রয়েছেন। সমিতিটি নিয়ম-নিতি অনুযায়ী সাধারন সভা না করে,কোন সাধারন সদস্যদের স্বাক্ষর ছাড়াই উপজেলা সমবায় অসাধু কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে রেজুলেশন বানিয়ে অডিট সম্পন্ন করেন।
সুকৌশলী মেম্বর ছেলেকে পনের লাখ টাকা দিয়ে করে দেন পাকা বাড়ি। সাহায্যকারী মেয়ে আমিনা জান্নাতের নামে মধুপুরে হীরা প্লাজায়
২০ লক্ষাধিক টাকা দিয়ে করে দেন দুইটি দোকান। আসলে এখানে বিনিয়োগ করেন আনোয়ার হোসেন।
আনোয়ার মেম্বর এতো ধূর্ত যে লোক দেখানোর জন্য ছেলে মেয়ে ও নিজে কিছু কিছু লোন করেন যাতে বলতে পারেন যে, আমি লোন করে এগুলো করেছি ।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়,মেম্বরের সৎ ছেলে আরিফ মেম্বরের সহোযোগীতায় অটোরিকশা চুরির চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। সে একাধিকবার চুরির অভিযোগে ধরা পরে জেলে গেছেন। আনোয়ার মেম্বার বয়স্ক ভাতা থেকে নাগরিক সনদ ও গ্রাম সালীস করেও টাকা নেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন আনোয়ার মেম্বার ও তার পরিবার দুই -তিন লাখ টাকা লোন করে ও মেম্বারের বেতন দিয়ে কিভাবে এতো সম্পদশালী হলেন।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে, আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার মেয়ের দুটি দোকান করেছে সেখানে দশ-পনের লাখ টাকার পুঁজি রয়েছে, তার ছেলের ক্ষেত্রেও তাই। তিনি আরো বলেন, তিনি বিএনপি করতেন বিধায় তার ওয়ার্ডের বয়স্ক ভাতা থেকে সমস্ত কাজ নাকি চেয়ারম্যান করতেন, সে তার এলাকায় কোনো কাজ করতেন না।
প্রশ্ন থাকে- কিভাবে পতিত আওয়ামী সরকারের সময়ে সে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগপন্থি ওই চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার নিজ ওয়ার্ডের মেম্বর নির্বাচিত হলেন? আনোয়ার হোসেনের কোনো বৈধ প্রদর্শিত আয়ের উৎস নেই, নেই কৃষি কাজের জন্য তেমন কোন জমিও। তাহলে ইউপি সদস্যের ভাতা দিয়ে কিভাবে- দুইটা পরিবারের ভরনপোষণ করে এসব করা সম্ভব। বর্তমান সরকারের আইন প্রয়োগ কারি প্রতিস্ঠান, দুদকসহ এই বিষয় গুলো তদন্ত করে দ্রুততার সহিত ব্যাবস্থা নেবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।
আমারবাঙলা/জিজি