বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসবগুলো কেবল সিনেমার প্রদর্শনীতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সমকালীন রাজনীতি ও মানবিক ইস্যুগুলোও সেখানে উঠে আসে। ব্যতিক্রম হয়নি এ বছরের ৭৩তম সান সেবাস্তিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। স্পেনের এই মর্যাদাপূর্ণ আসর শুরু হয়েছিল ১৯ সেপ্টেম্বর এবং শেষ হলো গতকাল। উৎসবে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে অস্কারজয়ী অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ডাই মাই লাভ’।
একই মঞ্চে তিনি অর্জন করেছেন উৎসবের সর্বোচ্চ সম্মান ডোনোস্টিয়া অ্যাওয়ার্ড। তিনি সবচেয়ে কম বয়সী অভিনেত্রী হিসেবে এই পুরস্কারের মালিক হয়েছেন।
পুরস্কার হাতে নিয়েই লরেন্স সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে। তিনি সরাসরি মন্তব্য করেন ফিলিস্তিনের গাজা পরিস্থিতি নিয়ে।
তার স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, ‘আমি ভীত। এটি ভীষণ মর্মান্তিক। গাজায় যা ঘটছে, তা একেবারেই গণহত্যা। এটা মেনে নেওয়ার মতো কিছু নয়।
আমার সন্তানদের জন্য, আমাদের সবার সন্তানদের জন্য আমি আতঙ্কিত।’
কেবল গাজা নয়, নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তার ভাষায়, “সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে যে অসম্মান ও সহিংসতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা শিশুদের জন্য ভয়ঙ্কর। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।’
এদের ভোটাধিকার পেতে চলা তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন লরেন্স।
তিনি মনে করেন, ১৮ বছর হতে যাওয়া অনেক তরুণই রাজনীতিকে আর বিশ্বাস করে না। তাদের ধারণা—রাজনীতিবিদরা কেবল মিথ্যা বলেন এবং সহমর্মিতা দেখান না। লরেন্সের সতর্কবার্তা, ‘পৃথিবীর এক প্রান্তে যা ঘটে, সেটি উপেক্ষা করা যায় না। কারণ একদিন তা আপনার দেশেও এসে পড়তে পারে।,
তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, শিল্পীদের ওপর বাড়তি দায়িত্ব চাপানো ঠিক নয়। কারণ শিল্পীরাও রাজনৈতিক ঝুঁকি ও বিকৃত ব্যাখ্যার শিকার হতে পারেন। তার ভাষায়, ‘আমাদের দেশে বাকস্বাধীনতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হুমকির মুখে। যদি কোনো কথা বলেই এই পরিস্থিতি বদলানো যেত, আমি নিশ্চয়ই বলতাম। কিন্তু এখন এমন সময় এসেছে, যখন সৎভাবে কথা বলতেও ভয় হয়। কারণ রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্যকে বিকৃত করে ব্যবহার করতে পারেন।’
আমারবাঙলা/এফএইচ