বন্দর ব্যবহারকারীদের আপত্তি উপেক্ষা করেই নতুন ট্যারিফের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে এটি কার্যকর করা হয়।
নতুন এই ট্যারিফ কার্যকর করায় এখন ৪০ শতাংশ বাড়তি ট্যারিফ দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৫২টি খাতে ট্যারিফ আদায় করা হয়। ১৯৮৬ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবা খাতে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছিল। এ হিসেবে প্রায় ৩৯ বছর পর নতুন করে ট্যারিফ বাড়ালো অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে ১৯টি বেসরকারি আইসিডিও গড়ে ৫০ শতাংশ চার্জ বাড়িয়েছে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোতে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত জুনে গড়ে ৪০ শতাংশ হারে বর্ধিত ট্যারিফ প্রস্তাব প্রস্তাব পাঠায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে। তারা এটাতে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রস্তাব ফরোয়ার্ড করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সেখানে এটা পাস হওয়ার পর এখন জারি করা হলো প্রজ্ঞাপন। এর মধ্যে বন্দর ব্যবহারকারীদের সাথে হয়েছে একাধিক বৈঠকও।
গত ২ জুন নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে ট্যারিফ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা তাদের আপত্তির বিষয় তুলে ধরে। এর পর বৈঠক হয় বন্দর ভবনে। সেখানেও তারা আপত্তি তুলে ধরেন। কিন্তু তাদের সেই আপত্তি আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয়। তাই বন্দরের প্রস্তাবনা অনুসারেই ট্যারিফ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে, প্রতিটি ২০ ফুট এককের কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং চার্জ ১৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২৩ দশমিক ১৫ ডলার এবং ৪০ ফুট কন্টেইনারের ক্ষেত্রে ২২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে ৩৪ দশমিক ৮৩ ডলার করা হয়েছে। জাহাজ পাইলটিং চার্জ ৩৫৭ ডলার থেকে ৭০০ ডলারে উন্নীত করা হয়েছে। বন্দরের প্রস্তাবিত ৫৬টি সেবার মধ্যে ১৮টি খাতে ৬০ শতাংশের বেশি, ১৭টি খাতে ২০ থেকে ৫৯ শতাংশ এবং ১৯টি খাতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ১৯৮৬ সালের পর কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়ার পরও সব ট্যারিফ বাড়ানো যায়নি। বার বার সময় চেয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাই এবার নতুন প্রস্তাব গেছে। সেটির অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। সোমবারই নতুন ট্যারিফ কার্যকর করেছি আমরা।
জানতে চাইলে সিকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, হঠাৎ করে এত ট্যারিফ বাড়ানো জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়। আসলে ব্যবসায়ীদের মতামত কখনোই আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয় কিংবা বন্দর। এখন পণ্য পরিবহন ব্যয় এক লাফে অনেক বেড়ে যাবে। প্রকারান্তরে এই বর্ধিত খরচ যাবে দেশের ১৭ কোটি মানুষের কাঁধে।
আমারবাঙলা/এফএইচ