জামায়াতের রাজনীতির কড়া সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, জামায়াতের টিকিট কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে, এটা কোথায় আছে আমাকে বলুক। দেখিয়ে দিক কোথায় আছে। এটা ঠিক না। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে নেওয়া, এটা কখনোই ইসলাম এই কথা বলে না।
রাজধানীর আইডিইবির মাল্টিপারপাস হলে শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ এই আয়োজন করেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, জামায়াত ইসলামী রাজনীতিতে দাঁড়াতে পারছিল না। জিয়াউর রহমান সেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত দশ বছরে শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে দলটি দৃশ্যমান কোনো কাজ করেনি।
তিনি আরও বলেন, একটি দল পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নিয়ে এতোদিন সমানে চিৎকার করলেও এখন সুর নরম করেছে। বর্তমানে দলটি নির্বাচনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এ সময় পিআরের মতো গণভোটও মানুষ বুঝতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ১৫/১৬ বছর ধরে দেখেছি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা কী করে প্রতিটি মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমার ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। তারপর আবার দাবি করে যে, তারা ইসলামের পক্ষে কাজ করেছে। আরও দুঃখ হয় তখন, যখন দেখি আমাদের দেশেরই কিছু আলেম ওলামারা তার সঙ্গে মিটিং করে তাকে কওমি জননী উপাধি দিচ্ছি।
ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, সেখানে সরকার যেই হোক কমিউনিস্ট, ইসলামী বা গণতান্ত্রিক অ্যাসোসিয়েশন অব উলামা নামের শক্তিশালী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় না।
মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন নির্বাচন হবে এবং সেটা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনের জন্য তারা আগে দেখেছেন সংস্কার কমিশন করা হয়েছিল। সংস্কার কমিশন খুব বড় বড় পন্ডিতরা দেশে এসেছেন, বিদেশ থেকেও এসেছেন। তারা ৯ মাস ধরে আলাপ-আলোচনা করেছেন। অনেক সংস্কারের কথা বলেছে। সবশেষে যেটা বলেছে, এটা আমরা বুঝি না। দেশের মানুষ অনেকেই বুঝতে পারে না।
মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে, যাতে গণতান্ত্রিক সরকার ও গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট গঠন সম্ভব হয়। সেই পার্লামেন্টেই জাতীয় সমস্যাগুলো উত্থাপন ও সমাধান হবে, এটাই হবে জনগণের সিদ্ধান্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মাওলানা শাহ্ মো. নেছারুল হক। সঞ্চালনা করেন মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. জবাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান।
সভায় আরও বক্তব্য দেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (অব.) মুহাম্মদ রফিক উল ইসলাম, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ, ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখ।
আমারবাঙলা/এসএ