নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের অনলাইন, অনলাইনের জন্য নিবন্ধিত এবং নিবন্ধন পেতে আবেদন করা অনলাইন গণমাধ্যম ছাড়া বাকি সব অনলাইন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্যা রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
ডিআরইউ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) মিজান রহমানের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে একেবারে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন আছে। আর রেজিস্টার অনলাইন আছে ২১৩টি। অর্থাৎ মোট ৪২৬টি অনলাইন আছে। একইসঙ্গে যেগুলো দরখাস্ত করেছে, প্রক্রিয়াধীন আছে সবগুলোর লিস্ট করতে বলা হয়েছে। এর বাইরে যত অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, সেগুলো আমরা সব বন্ধ করে দেব।
তিনি বলেন, দরখাস্ত করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ হবে না। কারণ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা অনলাইন কিভাবে চলছে সেটা দেখতে হবে।
বর্তমান সরকারের ১০০ দিনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী কতোটা সফল? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ১০০ দিন খুবই অল্প সময়, বড় রকমের সফলতা দাবি করার জন্য। অনেক কাজ এগিয়েছে, কাজ যখন প্রক্রিয়াধীন থাকে সেটাকে প্রকাশ করা যায় না, ফলাফলটা যখন আসবে তখন করা যাবে।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারমুক্ত গণমাধ্যম, সাংবাদিকতার চমৎকার পরিবেশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য যা যা উপকরণ লাগে সেই বিষয়গুলোকে নিশ্চিত করতে চাই। আর মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান, তারাই অপতথ্যের ওপর ভর করে অপরাজনীতি করে।
তিনি বলেন, তথ্য প্রবাহকে অবারিত করতে চাই। তথ্য অধিকার আইন শেখ হাসিনার আমলেই সংসদে পাশ হয়েছে। তথ্য পাওয়ার অধিকার আইনগতভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে সেটাকে বাস্তবে আমরা আরও বেশি নিশ্চিত করতে চাই। রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা আছেন তাদের অনেকের তথ্য সরবরাহে কিছুটা অনীহা আছে। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে আমরা একটা বার্তা দিয়েছি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। আমরা চাচ্ছি তথ্য অধিকার আইনকে আরও সুদৃড় করার জন্য। তথ্য যদি চাওয়া হয় তবে তথ্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে। এই তথ্য দেওয়ার বিষয়টি আমাদের ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক। এটাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করছি প্রশাসনের প্রত্যেকটি স্তরে। যদি তথ্য না থাকে তখনই অপপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়। কাজেই কিছু প্রশাসনিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। যেন খুবই অল্প সময়ের মধ্যে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য পৌঁছাতে পারি এবং আপনারা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, একই ভাবে তথ্যের বিপরীতে অপতথ্য সমাজকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। তাই সবাই মিলে কিভাবে তথ্যের অবাধ প্রবাহকে আরও সুনিশ্চিত করতে পারি এবং এটি করতে গিয়ে আমি যেটা চিন্তা করি অপতথ্যকে রোধ করতে হবে। সাংবাদিকতার মধ্যে যারা পেশাদারিত্বে বাইরে গিয়ে অপসাংবাদিকতা করার চেষ্টা করে, আসল সাংবাদিকতাকে তারা সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করে।
আরাফাত বলেন, সমাজে অপশক্তি আছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক মুল্যবোধের সমাজের বিপরীতে তারা একটি অন্ধকারের সমাজ তৈরি করতে চায়। জঙ্গিবাদ মৌলবাদের সমাজ তৈরি করতে চায়। এই অপশক্তির সঙ্গে আমাদের নিরন্তর লড়াই। এই লড়াই করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, অর্থাৎ মুক্ত গণতন্ত্র, মুক্ত গণমাধ্যম, অবাধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে কখনও কখনও হোচট খেয়েছি। ক্লাইমেট ঝুঁকির চেয়ে বেশি ঝুঁকি হচ্ছে অপতথ্যের ঝুঁকি। স্যোসাল মিডিয়া বিশেষ করে এখানে কোন ধরনের নীতিমালা না থাকার কারণে এই অপতথ্যের বিস্তার ঘটছে।
তিনি বলেন, মূলধারার গণমাধ্যমে একটা নীতিমালা আছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন নীতিমালা না থাকার কারণে এর ডালপালা বিস্তৃত হচ্ছে। সেইখানে আমরা একটা নীতিমালার আওতায় আনতে চাচ্ছি। মিথ্যা খবর কোন ভাবে সমাজের কল্যাণ আনতে পারে না। এখানে সবাই একমত। আমরা কিন্তু বলছি না সরকারের পক্ষে বা আওয়ামী লীগের পক্ষে হোক, খবর সত্য হোক সেটা সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষে-বিপক্ষে যাক।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            