ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর ‘গালে চড়’ দিচ্ছেন তাঁর স্ত্রি ব্রিজিট মাখোঁ-এমন একটি ভিডিও মঙ্গলবার (২৭ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উধাও হয়ে গেছে ভিডিও। সেটি আর কোথাও নেই। না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, না টেলিভিশনের পর্দায়, না অন্য কোনো গণমাধ্যমে।
মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএন বলছে, ভিয়েতনাম সফরের শুরুতে বিব্রতকর এক পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। উড়োজাহাজ থেকে নামার সময় দেখা যায়, স্ত্রী ব্রিজিট মাখোঁ তাঁর গালে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়েছেন। ওই সময় উড়োজাহাজের দরজা খোলা ছিল। সবাই সেই দৃশ্য দেখতেও পান। তবে পরের দিন সকালে ফ্রান্সের কোনো সংবাদপত্রে খবরটি দেখা যায়নি।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ব্যক্তিগত জীবন আড়ালে রাখার সংস্কৃতি ফ্রান্সে নতুন কিছু নয়। ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিটারান্ডে তাঁর ‘অবৈধ’ কন্যাকে বছরের পর বছর জনগণের চোখের আড়ালে রেখেছিলেন।
আরেক সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ ও তাঁর বান্ধবী অভিনেত্রী জুলিয়া গায়েতের ছবি প্রকাশ করেছিল ক্লোজার ম্যাগাজিন। ২০১৪ সালে ওই ছবি প্রকাশের পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সবাই তখন ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর নগ্ন আঘাত’ বলে এর নিন্দা করেছিল। সমালোচনার মুখে দুঃখপ্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছিল ক্লোজার ম্যাগাজিন। যদিও ফ্রাঁসোয়া ওলাদের তখন ভ্যালেরি ট্রিয়ারওয়েলার নামে আরও একজন লিভ–ই পার্টনার ছিল।
মঙ্গলবার ইমানুয়েল মাখোঁর গালে চড় দেওয়ার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও, তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ওই ভিডিও ক্লিপ প্রচার করলেও দ্রুতই তারা ভিডিওটি সরিয়ে নেয়।
বর্ষীয়ান ফরাসি সংবাদিক থিয়েরি আরনাউড সিএনএনকে বলেন, ‘রাজনীতিকদের ব্যক্তিগত জীবন গোপন রাখা ২০ বছর আগের তুলনায় এখন অনেক কঠিন। এটা সত্য যে, মাখোঁর জন্য ঘটনাটি বিব্রতকর ছিল। এমনকি যারা ভিডিওটি দেখেছেন, তাদের জন্যও অস্বস্তিকর। মূল কথা হচ্ছে, কোনো দম্পতির একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তে আপনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।’
সিএনএন বলছে, মাখোঁ ও ব্রিজিটের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক ছিল না। মাখোঁর বয়স যখন ১৫, তখন ব্রিজিটের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। ব্রিজিট তখন অ্যামিয়েন্সের একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ছিলেন মাখোঁর চেয়ে ২৪ বছরের বড়, বিবাহিত ও তিন সন্তানের জননী।
পরিচয়ের পর দ্রুতই ব্রিজিটের সঙ্গে গভীর প্রেমে আবদ্ধ হয়ে পড়েন মাখোঁ। ওই কিশোর বয়সেই তিনি ব্রিজিটকে কথা দিয়েছিলেন-‘তুমি যাই করো না কেন, আমি তোমাকে বিয়ে করব।’ এরপর ২০১৭ সালে মাখোঁ ও ব্রিজিট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
আমারবাঙলা/জিজি