সংগৃহীত
ফিচার

সুরে সুরে যোগাযোগ করেন ‘বাঁশির গ্রামের’ মানুষ

আমার বাঙলা ডেস্ক

সভ্যতার বিকাশের এই পর্যায়ে আমরা মনের ভাব প্রকাশ করি কথার মাধ্যমে। কিন্তু মনের ভাব যদি সুরে সুরে হয় বিষয়টি কেমন লাগবে?

ভারতের মেঘালয়ের গ্রাম কংথং। অনেকে গ্রামটিকে ‘বাশির গ্রাম’ বলে। এ গ্রামে মানুষ কথা বলে না। বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই সুরে সুরে একে অপরের সঙ্গে কথা বলে!

গ্রামটিতে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বাঁশির সুর আর গানের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মানুষের নাম এখানে শুধুই শব্দ নয়, একটি বিশেষ সুর, যা তাকে সারা জীবন ডাকতে ব্যবহৃত হয়। শুনতে অবাক লাগলেও, এই গ্রামের মানুষরা প্রাচীন খাসি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে ধরে রেখে গানের মাধ্যমে তাদের পরিচয় বহন করে চলেছেন। আর এই সুরেলা প্রথাই তাদের পরিচিতি এনে দিয়েছে ভারতের ‘বাঁশির গ্রাম’ হিসেবে।

এই বিশেষ প্রথার নাম ‘জিংরোয়াই লাওবেই’, যার মাধ্যমে মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য একটি অনন্য সুর তৈরি করেন। এই সুরই সেই সন্তানের পরিচয় হয়ে ওঠে। ইবাসিশা খংসিত, গ্রামের একজন বাসিন্দা, জানালেন যে তারা ছোটবেলায় তাদের মা-বাবাদের কাছ থেকে এই সুর শিখেছেন। আজ তারাও তাদের সন্তানদের এই ঐতিহ্য শিখিয়ে যাচ্ছেন।

তারা বলেন, যখন কোনো বন্ধুকে ডাকা প্রয়োজন, তারা সুর তোলেন এবং উত্তরটাও সুরেই আসে। এই সুরের মাধ্যমে তারা কাজের সময়ও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

কংথং-এর এই সুরেলা ঐতিহ্য এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। শিলং থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামটিতে আজকাল বহু পর্যটক আসেন কেবল এই ঐতিহ্যটি দেখার জন্য।

স্থানীয় পর্যটন সমন্বয়ক রাফায়েল রালফ শাদাপ জানালেন, গ্রামের দূরবর্তী অবস্থান সত্ত্বেও এই অনন্য সুরের সংস্কৃতি তাদের বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছে। এমনকি এই গ্রামকে ইউনাইটেড নেশনস ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অরগানাইজেশন কর্তৃক ভারতের সেরা পর্যটন গ্রামগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।

এই গ্রামের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে বাঁশির সুর যেন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে প্রতিটি ডাক, প্রতিটি যোগাযোগ, এমনকি কাজ করার সময়ও সুরের মধ্যেই প্রকাশিত হয়। এ যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার এক সুরেলা ভাষা, যা মানুষকে শুধু একে অপরের সঙ্গে নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গেও যোগ করে।

এই গ্রামে প্রযুক্তি নয়, সুরের মধ্যে লুকিয়ে আছে যোগাযোগের শক্তি। পর্যটকরা এখানে এসে সেই সুরের মধ্যেই হারিয়ে যান, যেখানে প্রতিটি ডাকের মধ্যেই মিশে থাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা ঐতিহ্যের সুর।

এমন আজব গ্রামের বাসিন্দা দুই বিবাহিত বোন সিডিয়াপ খংসিট ও সিথোহ খংসিটের জীবন নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিও নির্মাণ করেন মনিপুরি পরিচালক ওইনাম দোরেন। বিভিন্ন দেশ-বিদেশে পুরস্কারও অর্জন করেছে ছবিটি।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি, এপারে আতঙ্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে। টানা ১০ দিন বন্ধ থাক...

বুলবুলের ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ তত্ত্ব কী

আইসিসিতে অনেক বছর কাজ করেছেন বলেই হয়তো সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করার ব্যাপারটি বেশ...

আবিদ-হামিদ-মায়েদ পরিষদ, প্যানেলে আরও আছেন যারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্যানেল ঘ...

ইরান ফেরত আফগানদের বাস দুর্ঘটনার কবলে, নিহত ৭১

আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৩ জনের মৃত্...

জাপান ও কানাডায় চালু হচ্ছে এনআইডি  কার্যক্রম

চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে জাপানে এবং সেপ্টেম্বরের শুরুতে কানাডায় প্রবাসী বাংলাদে...

দুই চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব আর জনগণের ভালোবাসা নিয়ে ‘রূপনগর’

দীপ্ত টিভিতে আসছে কায়সার আহমেদের নতুন মেগা ধারাবাহিক নাটক ‘রূপনগর&rsquo...

সাকিব ভুলে গেছেন ব্যাটিং কীভাবে করতে হয়

ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) শীর্ষে উঠে গেছে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুড...

আবারও কী সেই নাঈম শেখ

লিটন কুমার দাস প্রতিষ্ঠিত একটি দল নিয়ে খেলতে চান এশিয়া কাপে। অভিজ্ঞতা সঙ্গী ক...

রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের রিভিউয়ের রায় পেছাল

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার টানা শুনানির ফলে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাক্রম মামলার...

কেন অভিনয় ছেড়েছিলেন ভারতের প্রথম ‘লেডি সুপারস্টার’

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে উজ্জ্বল তারকাদের একজন তিনি। সৌন্দর্য, নাচ, অভিনয়&mdash...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা