রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অম্বরপুর গ্রামে এক প্রবাসীর জমি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী মো. সুজন শেখ গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি জেলা প্রশাসনের গণশুনানিতে অংশ নিয়েও অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী মো. সুজন শেখের বাড়ি ছোটভাকলা ইউনিয়নের অম্বরপুর গ্রামে। তার বাবা মো. মোতালেব শেখ। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ছোটভাকলা মৌজার বিএস ৫২৮, ৪২৫ ও ২১১ নম্বর খতিয়ানে মোট ১০৯ শতাংশ জমির স্বত্ব তারা ২০১৩ ও ২০২০ সালে কবলা দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন। তবে একই গ্রামের মো. ইউনুছ সরদার ও মো. কালাম মোল্লা তার ওই জমির মধ্যে ৩৮ শতাংশ জোরপূর্বক দখল করে পুকুর খনন করছেন। বাধা দিতে গেলে তারা হুমকি ও প্রাণনাশের ভয় দেখান।
রাজবাড়ী থেকে বেড়িবাঁধ হয়ে গোয়ালন্দ যাওয়ার পথে অম্বরপুর এলাকায় বাঁধের বাম পাশে বড় আকৃতির একটি দীঘি খনন করা হচ্ছে। সেখানে একটি মাটি কাটার ভেকু মেশিনও রাখা রয়েছে, তবে কোনো শ্রমিকের উপস্থিতি দেখা যায়নি। দীঘিটির পূর্ব পাশেই রয়েছে সুজন শেখের বাড়ি। চারপাশে চালা বাঁধা এবং অভ্যন্তরের অংশবিশেষে মাটি কাটা হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, রাতের বেলা মাটি কেটে ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। দীঘিটির চারপাশে আবাদি জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে।
সুজন শেখ বলেন, "আমি দুবাইতে ছিলাম। হঠাৎ একদিন আমার বাবা ফোন করে জানান, আমাদের জমি দখল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে। খবর পেয়ে দেশে ফিরে দেখি, আমাদের জমিতে চালা বাঁধা হয়ে গেছে। অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাইলে তারা উল্টো মারতে আসে। দিনভর কোনো মাটি কাটা হয় না, কিন্তু রাত হলেই ভেকু দিয়ে মাটি কাটা শুরু হয়। প্রথমে আমি এসিল্যান্ড স্যারের কাছে অভিযোগ জানাই। তিনি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। ১২ ফেব্রুয়ারি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিই, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে, ২৭ ফেব্রুয়ারি ডিসি স্যারের গণশুনানিতে অংশ নিয়ে অভিযোগ জানাই। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।"
অভিযুক্ত মো. ইউনুছ সরদার বলেন, "যেখানে পুকুর কাটা হচ্ছে, সেখানে আমার কিছু জমি আছে। তবে মূল মালিক কালাম মোল্লা। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। আমি এলাকায় থাকি না।"
কালাম মোল্লা বলেন, "সুজন মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমাদের নিজস্ব জমিতেই আমরা পুকুর কাটছি। আগামী সপ্তাহে জমি মাপা হবে, প্রয়োজনে আপনিও আসতে পারেন।" পুকুর খননের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "গত বছর অনুমতি নিয়েছি।"
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, "সুজন শেখ নামে একজন অভিযোগ করেছেন যে, তার জমি দখল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আমরা দ্রুতই নোটিশ পাঠিয়ে দুই পক্ষকে ডেকে কাগজপত্র যাচাই করব।"
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            