রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি খোন্দকার মশিউল আজম ওরফে চুন্নুর বিরুদ্ধে প্রবাসীকে কুপিয়ে জখম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সদর বাজারে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হচ্ছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে বালিয়াকান্দি বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে চৌরাস্তা মোড়ে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খোন্দকার মশিউল আজম বিএনপির একজন ত্যাগী নেতা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাঁর বিরুদ্ধে ৪৮টি মিথ্যা মামলা হয়েছিল। বর্তমানেও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে। ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
সমাবেশ শেষে বালিয়াকান্দি বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক হরতালের ডাক দেন। এ সময় সভাপতি ওসমান গণি মানিকসহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে ইতালিপ্রবাসী মাসুম শেখের স্ত্রী পলি আক্তার বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় মাসুম শেখকে কুপিয়ে জখম করা হয়। মামলার আসামি করা হয়েছে বিএনপি নেতা মশিউল আজম, তাঁর দুই ছেলে খোন্দকার শফিউল আলম, খোন্দকার শোভন আরেফিনসহ আরও পাঁচজনকে।
দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়। ‘বালিয়াকান্দি সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে মাসুম শেখ, তাঁর স্ত্রীসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
মাসুম শেখ অভিযোগ করেন, ১৮ বছর ধরে তিনি ইতালিতে থাকেন। ১৩ আগস্ট দেশে ফিরে ১৫ আগস্ট বাবার কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে শফিউল আজম, তাঁর ছেলে শফিউল আলমসহ কয়েকজন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দেওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। তিনি আরও বলেন, ‘তারা আওয়ামী লীগ সমর্থকের মিথ্যা অভিযোগে আমাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে পুলিশ ছেড়ে দেয়।’
মাসুমের স্ত্রী পলি আক্তার বলেন, ‘আমি বালিয়াকান্দি উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতাম। মশিউল আজমের ছেলে শফিউল আলম আমাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালে মামলা করলে সে কয়েক মাস জেল খাটে। এরপর আমাকে বদলি হয়ে ফরিদপুর যেতে হয়।’
আমারবাঙলা/এফএইচ