নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে এ আহ্বান জানান তিনি।
মঈন খান বলেন, এখনো সময় আছে, আপনারা ভাবুন, আলোচনায় বসুন, চিন্তা করুন, সংলাপ করুন। হিংসাত্মক সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। আওয়ামী লীগ ভয় পাচ্ছে বলেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছে না। যে যত কথাই বলুক না কেন, মূল কারণ তো এটাই। ভয় পাওয়ার তো কোনো কারণ নাই। আপনারা নির্বাচন সুষ্ঠু করে দিন। এমনও হতে পারে বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়ে আবার আপনাদেরই ভোট দেবে। বাংলাদেশের মানুষের যে চরিত্র এবং মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা সেটা উপলব্ধি করে আপনারা রাজনীতি করুন।
তিনি বলেন, টেলিভিশন মিডিয়া বলেন, আর সোশ্যাল মিডিয়া বলেন— তাদের গুরু দায়িত্ব হচ্ছে, যারা দেশ পরিচালনা করে তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে। জবাবদিহিতা করতে হবে জনগণের সামনে। এজন্যই পৃথিবীর প্রায় সব সরকার সংবাদপত্রকে ভয় পায়। মিডিয়ার হাতে বন্দুক নাই, টিয়ার গ্যাস নাই, সাউন্ড গ্রেনেড নাই। কিন্তু তাদের হাতে যে জিনিসটি আছে, সেটি হচ্ছে কলম। আজকে আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের সরকার যত শক্তিশালী হোক সেটাকে কিন্তু মিডিয়া ধাক্কা দিয়ে ফেলে যেতে পারে। এজন্য বন্দুকের দরকার হয় না।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আজকের যে পরিবেশ পরিস্থিতি সেখানে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। কোনো আধুনিক সমাজ এভাবে বসবাস করতে পারে? ১৭৭১ সাল থেকে আড়াইশো বছর পেরিয়ে আজকের সরকার কি মানব সভ্যতার পেছনের দিকে হাঁটছে? যেখানে ১৭৭১ সালে সংবাদপত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ভূমিকা ব্রিটিশ সরকার নিশ্চিত করেছিল। সেখানে আজকে আমরা সংবাদপত্রের টুটি চেপে ধরে আছি। তাদের এই সরকার বলছে, তোমরা কথা বলতে পারবে না।
বিএফইউজ’র নির্বাচনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে একটি তামাশার নির্বাচন বর্জন করেছি, কিন্তু নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা জানি আজকের পরিবেশ পরিস্থিতি অত্যন্ত দুরূহ। তারপরও আমরা জানি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন আজকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছে এজন্য তারা প্রশংসা পাবে। আমরা সরকারের চোখে এটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই। এই চরম পরিস্থিতির মধ্যে সুস্থ নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমি সরকারকে অনুরোধ করবো, ৭ তারিখ খুব বেশি দূরে নয়। আপনারা যেভাবে বানরের পিঠা বেচার নির্বাচনের আয়োজন করেছেন, নির্বাচনের আগেই সব সিটের ফলাফল ইতিমধ্যে নির্ধারণ করে ফেলেছেন। এখনো সময় আছে এই অপবাদ থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন এতে করে বিএনপির সুনাম হবে না, সুনাম আওয়ামী লীগেরই হবে।
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। বিএনপি সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ সাংবাদিককে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিক বিভাজন থাকতে পারে। তবে সেটা আওয়ামী লীগের বাংলাদেশ, বিএনপির বাংলাদেশ এটা আমি বিশ্বাস করি না। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আজকে আওয়ামী লীগ সরকার এই বিভাজন তৈরি করেছে। এ সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘ করার জন্য বা চিরস্থায়ী করার জন্য জাতির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ সভাপতিত্ব করেন। এসময় বিএফইউজের নির্বাচনের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এবি/এইচএন
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            