পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তিকে ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এনইউবি)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারিনি।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এনইউবি) এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, একটি জাতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে হলে প্রথমেই তার বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তিকে ধ্বংস করতে হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবেই সেই কাজটি করেছিল। তবে জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো—আজও আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারিনি।
সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার শাসনামলের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সেই সময় খুন, গুম, রাহাজানি ও লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। কার্টুনিস্ট মুশতাককে কারাগারে হত্যা, আয়নাঘরে নির্যাতন এবং হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হওয়ার মতো ঘটনাগুলো জাতির ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা সবসময় নিঃস্বার্থ ও নিষ্ঠাবান হন। তারা জাতির লক্ষ্য নির্ধারণ করেন এবং জাতি গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যান। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমানে এমন কিছু ব্যক্তিকে দেখা যায়, যারা বুদ্ধিজীবী নাকি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী—তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ইকোনমিকসের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, পৃথিবীতে সব কিছুরই একটি মূল্য আছে। অথচ বাংলাদেশের তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী কোনো মূল্য ছাড়াই নিজেদের বিক্রি করে দেন। তিনি প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন এবং একই সঙ্গে ভণ্ড বুদ্ধিজীবীদের প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও তিতিক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বার্থপরতা ও ভোগবিলাস থেকে মুক্ত থেকে জাতিকে এগিয়ে নিতে সবাইকে প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান উপাচার্য।
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ড. মো. মারুফ-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. কবীর উদ্দিন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রো-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. (লে. কর্নেল অব.) সর্দার মাহমুদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সিএসই বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. রায়হান-উল-মাসুদ এবং ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
আমারবাঙলা/আরআরপি