তামাকজনিত মৃত্যু ও তামাকের ব্যবহার কমাতে এবং তামাকমুক্ত সুস্থ জাতি গঠনে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগী ও শক্তিশালীকরণের দাবিতে সমাবেশ ও প্রতীকী কফিন র্যালি করেছে তামাকবিরোধী ১৭টি সংগঠন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৯ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় আয়োজিত সমাবেশে এমন দাবি জানায় তারা। সমাবেশ শেষে কফিন র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
এ সময় বক্তারা জানান, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ, পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রকাশিত গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একইসময়ে এই খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি) চেয়ে অনেক বেশি।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাক পণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছে কোম্পানীগুলো। এ সময় আইন ভঙ্গ করা বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান বক্তারা।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত এবং ৬১ হাজারেরও বেশি শিশু (১৫ বছরের নিচে) পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নানা রোগে ভূগছে। বক্তারা জানান এ আইনটি দ্রুত পাসের মাধ্যমে শক্তিশালী করা গেলে একদিকে অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবেন। অন্যদিকে আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের তামাক পণ্য ব্যবহারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। পক্ষান্তরে তামাকজনিত কারণে মৃত্যু রোধ করা সম্ভবপর হবে।
পাশাপাশি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাসের মাধ্যমে শক্তিশালী করে ধুমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট বা হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট থেকে তরুণদের রক্ষা করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তা ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানো হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, প্রত্যাশার হেলাল আহমেদ, এইড ফাউন্ডেশনের আবু নাসের অনিক, টিসিআরসির ফারহানা জামান লিজা, বিএনটিটিপি’র হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, তামাক বিরোধী নারী জোটের সিমা দাস শিমু, মানসের উম্মে জান্নাত, নারী মৈত্রীর নাসরিন আক্তার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ডা. অরুনা সরকার, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের মিঠুন বৈদ্য এবং আহাছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিয়িং- এর সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা বক্তব্য দেন।
আয়োজক ১৭টি সংগঠন হলো ঢাকা আহছানিয়া মিশন, প্রজ্ঞা, ডরপ, নারী মৈত্রী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বিএনটিটিপি, বিসিসিপি, টিসিআরসি, ডাব্লিইউবিবি ট্রাষ্ট, নাটাব, এইড ফাউন্ডেশন, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, প্রত্যাশা, পিপিআরসি, মানস, তাবিনাজ এবং বিটিসিএ।
আমারবাঙলা/জিজি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            