রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং । ছবি: ব্লুম্বার্গ
আন্তর্জাতিক
সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা সম্মেলন

চীন, রাশিয়া ও ভারত: নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গঠনের ইঙ্গিত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর সম্মেলনে চীন, রাশিয়া ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের বিরল এক বৈঠক বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের আভাস দিয়েছে। অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এ উদ্যোগ পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ক্ষমতার ভারসাম্য পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা।

কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একই মঞ্চে আসীন হন। বৈঠকে তিন নেতা বৈশ্বিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অভিন্ন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যদিও আনুষ্ঠানিক বিবৃতিগুলো সতর্কতার সঙ্গে প্রণীত, তবুও প্রতীকী দিক থেকে এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

বিশ্লেষকদের মতে, একসময়ের আঞ্চলিক নিরাপত্তাভিত্তিক জোট এসসিও এখন ক্রমশ পশ্চিমা জোটগুলোর বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে। এ প্রেক্ষাপটে চীন ও রাশিয়া সক্রিয়ভাবে সমান্তরাল সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে, আর ভারত এখানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির ভূমিকা রাখছে।

সম্মেলনে বাণিজ্য, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়। চীন বহুমেরু বিশ্বব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়, রাশিয়া পশ্চিমা বিচ্ছিন্নতার মাঝে এশীয় অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে। তবে ভারত ছিল তুলনামূলকভাবে সংযত। প্রধানমন্ত্রী মোদি আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করলেও, চীন ও রাশিয়ার অবস্থানকে সরাসরি সমর্থন করা থেকে বিরত থাকেন। নয়াদিল্লি একদিকে এসসিও’র সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে।

তবে ঐক্যের এই প্রদর্শনের মাঝেও দ্বন্দ্ব অটুট রয়ে গেছে। চীন-ভারতের সীমান্ত বিরোধ এখনও অমীমাংসিত এবং নয়াদিল্লির ওয়াশিংটনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। একইসঙ্গে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপে রাশিয়ার চীনের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতা মস্কোর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবশালী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

এর পরও শি জিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদির এই যৌথ উপস্থিতি ভূ-রাজনীতির পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যখন পশ্চিমা বিশ্ব মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক বিভাজন এবং যুদ্ধ ক্লান্তিতে জর্জরিত, তখন বিকল্প শক্তির কেন্দ্রগুলো ক্রমশ নিজেদেরকে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার স্থপতি হিসেবে উপস্থাপন করছে।

সূত্র: সিএনএ প্রতিবেদন

আমারবাঙলা/এফএইচ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায়ের দিন ঘোষণা হবে ১৩ নভেম্বর

গত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষম...

নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ৩৬ প্রস্তাব বিএনপির

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে...

একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেছেন, একটি রাজনৈতিক দল...

আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রীর ছেলে

কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বাস্থ্যপ্রতিম...

বাংলাদেশে সাইবার হামলার বড় অংশ আসে চীন থেকে

দেশের ব্যাংক খাতে প্রতিদিনই চার শতাধিক সাইবার হামলার শিকার হতে হচ্ছে। বাংলাদে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা