ব্লকবাস্টার হিট দিয়ে হিন্দি সিনেমায় অভিষেক তাঁর। কিন্তু মাত্র ২২ বছর বয়সেই বিদায় জানান বলিউডকে। কে এই অভিনেত্রী? জেনে নেওয়া যাক হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে।
১৯৮১ সাল হিন্দি ছবির জন্য অন্যতম একটি দুর্দান্ত বছর ছিল। অমিতাভ বচ্চন সেই বছর ‘নসিব’, ‘কালিয়া’, ‘লাওয়ারিস’-এর মতো ছবি উপহার দেন। দিলীপ কুমার ‘ক্রান্তি’ ছবি নিয়ে আসেন। অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের অভিনেতারাও দুটি হিট ছবি দেন, ‘রকি’ ও ‘লাভ স্টোরি’। ‘রকি’ ছবি নায়ক হিসেবে সঞ্জয় দত্তর প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু সেই বছর ‘রকি’–এর থেকেও বক্স অফিসে বেশি সাফল্য পেয়েছিল ‘লাভ স্টোরি’। এই ছবির দুই অভিনেতা-অভিনেত্রী রাতারাতি তারকা বনে যান।
রাহুল রাওয়াল পরিচালিত ‘লাভ স্টোরি’ ছবিটির হাত ধরে রাজেন্দ্র কুমারের ছেলে কুমার গৌরবের পাশাপাশি বলিউডে পা রাখেন বিজয়েতা পণ্ডিত। ছবিটি তো হিট করেই, ছবির গানগুলো দারুণ জনপ্রিয় হয়। সেই সময় বিজয়েতা পন্ডিত ও কুমার গৌরবকে বলিউডের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল দুই তারকা বলে মনে করা হতো। আশির দশকের মাঝামাঝি শ্রীদেবী, মাধুরী দীক্ষিতদেরও ছাপিয়ে গিয়েছিলেন তিনি জনপ্রিয়তায়। কিন্তু এই সাফল্য তিনি খুব কম সময়ের জন্যই উপভোগ করতে পারেন।
‘লাভ স্টোরি’ ছবিতে কাজ করার সময়ই মন দেওয়া–নেওয়া হয় কুমার গৌরব ও বিজয়েতা পণ্ডিতের। ছবির সাফল্যের সঙ্গে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের সম্পর্কও। কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি কুমার গৌরবের বাবা। তিনি ছেলেকে বিজয়েতার সঙ্গে বিচ্ছেদ করে ক্যারিয়ারে মন দিতে বলেন।
এক সাক্ষাৎকারে বিজয়েতা রাজেন্দ্র কুমারকে দুষেছিলেন তাঁর ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য। তাঁর কথায়, ‘তিনি কথায় কথায় খুব রেগে যেতেন, আমি বুঝতাম সেটা। বান্টিকে (কুমার গৌরব) বকাবকি করতেন, বলতেন ক্যারিয়ারে মন দাও। এই মেয়েটার সঙ্গে প্রেম করে ঠিক করোনি। তুমি আমার রাজকুমার, তোমায় আমি একটি রাজকুমারী এনে দেব। ভালো বাড়ির, বড়লোকের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেব। সেসব শুনে আমি খুব ভয় পেতাম।’
বিজয়েতা জানান, যে কুমার গৌরব তাঁর বাবার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন, কিন্তু তবুও শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তিনি জানান, এই সম্পর্কই তাঁর ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমি কাজ করতে চেয়েছিলাম। অনেক ছবির প্রস্তাব আসছিল। “রাহি”–এর জন্য তো ১০ দিনের শুটিংও করি। কিন্তু রাজেন্দ্র আমাকে সব ছবি থেকে সরিয়ে দেন। আমাকে কুমার গৌরবের সঙ্গে আর কাজ করতে দেননি। তবে পরে তাঁর সব ছবি ফ্লপ হয়। উনি নিজের ছেলের সঙ্গে আমার ক্যারিয়ারও নষ্ট করেন।’
১৯৮৫ সালে ‘মহব্বত’ নিয়ে ফেরেন বিজয়েতা, সেটাও হিট হয়। কিন্তু এরপর বেশ কিছু ফ্লপ ছবিতে কাজ করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে তিনি পরিচালক সমীর মালকানকে বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। এরপর ১৯৯০ সালে তিনি আদেশ শ্রীবাস্তবকে বিয়ে করে অভিনয় ছেড়ে দেন মাত্র ২২ বছরে।
আমারবাঙলা/জিজি