চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকায় একটি বাসা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সুমনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজ বাসা থেকে তার দেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, পুলিশ বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছে।
■ শেষ ক’দিনে কী ঘটেছিল
স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য অনুযায়ী, সুমন খুলশীর ৫ নম্বর লেনের ১৭ নম্বর বাসায় তার মামার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। দুই দিন আগে তার মামারা পরিবারসহ বিদেশ ভ্রমণে গেলে বাসায় সুমন ও তার বড় ভাই—এই দু’জনই অবস্থান করছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ৮টার দিকে বড় ভাই কর্মস্থলে যাওয়ার পর সারা দিন সুমন বাসায় একাই ছিলেন। বিকাল চারটার দিকে বড় ভাইকে ফোন করে তিনি জানতে চান—‘তুমি কোথায়, বাসায় আসতে কতক্ষণ লাগবে?’ বড় ভাই জানান তার আসতে কিছুটা দেরি হবে। এর পরপরই সুমনের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সন্ধ্যায় সুমনের ফোন বন্ধ পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। খোঁজ নিতে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে বাসায় গিয়ে দেখার অনুরোধ করেন। সাড়া না পেয়ে তিনি দ্রুত বাসায় ফিরে এসে বিষয়টি নিশ্চিত হন এবং পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দেন।
■ পুলিশের প্রাথমিক ধারণা
খবর পেয়ে খুলশী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে।
■ একটি চিরকুট
ঘটনাস্থল থেকে একটি নোট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানে সুমন নিজের পরিচয় উল্লেখ করে লিখেছেন যে তার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই এবং কারও প্রতি কোনো অভিযোগও নেই। পরিবারের সদস্যরা নোটটি হাতে পেয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন।
■ পরিবারের সদস্যদের মনোকষ্ট
হঠাৎ এই মৃত্যুকে পরিবারের কেউই মেনে নিতে পারছেন না। তারা জানান, সুমন শান্ত-স্বভাবের ছেলে ছিলেন; কী কারণে তিনি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলেন, তা তাদের বোধগম্য নয়। বিষয়টি বিশদ তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার হবে বলেই তাদের আশা।
■ তদন্ত অব্যাহত
খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও ডিজিটাল ফরেনসিক বিশ্লেষণ—সব তথ্য সংগ্রহ করে ঘটনাটির প্রকৃত সত্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলছে।