ছোটবেলা থেকেই নিজেকে নায়িকা ভাবতেন মন্দিরা চক্রবর্তী। কাছের বন্ধুরাও তাঁকে নায়িকা বলেই ডাকতেন। নাচের প্রতি ঝোঁক ছিল বেশি। তাই প্রথমে নাচের মাধ্যমেই বিনোদন অঙ্গনে আসা। এরপর অভিনয়ে যুক্ত হন। এরই মধ্যে দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ‘নীলচক্র’। এই ছবির পর আলোচনায় উঠে এসেছেন মন্দিরা।
নতুন করে আবারো শরীফুল রাজের সঙ্গে জুটি বাঁধতে যাচ্ছেন কি না-বিভিন্ন সূত্রে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে রবিবার মন্দিরার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। জানালেন, একটি নয়, সাতটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। তবে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, কোন গল্প দিয়ে নতুন ছবির শুটিং শুরু করবেন।
পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্দিরা বললেন, ‘এখনই তা প্রকাশ করতে চাই না। কথাবার্তা চূড়ান্ত হোক, তবেই ধীরে ধীরে জানাব।’
মন্দিরা চক্রবর্তী অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কাজলরেখা’। গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত এই ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো ‘সেরা নাচিয়ে’ দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে পথচলা শুরু করেন মন্দিরা। এরপর ‘কাজলরেখা’ ছবিটি তাঁকে আরও পরিচিতি এনে দেয়। এতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন শরীফুল রাজ। এরপর ‘নীলচক্র’ ছবিতে অভিনয় করেন আরিফিন শুভর বিপরীতে। গত ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া ছবিটি এখন দেশের বাইরের প্রেক্ষাগৃহেও প্রদর্শিত হচ্ছে।
‘নীলচক্র’ মুক্তির পরের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে মন্দিরা বলেন, ‘আমার কাছে সাতটি ছবির প্রস্তাব এসেছে। গল্প শুনেছি, শুনছি। এর মধ্যে চারটি ছবিতে শরীফুল রাজকে নায়ক হিসেবে ভেবেছেন পরিচালক। অন্য তিনটির মধ্যে প্রথম সারির দুজন নায়ক রয়েছেন। আমি ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছি। চাই, যেটা করব, সেটা নিয়ে যেন আলোচনা হয়, সমাদৃত হয়।’
মন্দিরা আরো যোগ করেন, ‘একদম মাশালা টাইপের সিনেমায় কাজ করতে চাই। আমি নাচের মেয়ে। এখন পর্যন্ত যেসব ছবিতে অভিনয় করেছি, তেমনভাবে নাচের মুনশিয়ানা দেখানোর সুযোগ পাইনি। আমি যেমন পিওর রোমান্টিক গানে পারফর্ম করতে চাই, তেমনি আইটেম গানেও নিজেকে উপস্থাপন করতে চাই।’
অন্যদিকে দর্শকেরও মন্দিরার প্রতি কিছু প্রত্যাশা রয়েছে। তাঁদের মতে, মন্দিরা সুন্দরী ও আবেদনময়ী-এ নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। তবে অভিনয়ে আরও উন্নতি দরকার। মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমার একজন নায়িকার মধ্যে যা যা থাকা দরকার, মন্দিরার মধ্যে সেগুলোর বেশির ভাগই আছে। অভিনয়দক্ষতা বাড়ালে তিনি আরো অনেক দূর যেতে পারবেন।
এই আলোচনা-সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবেই দেখেন মন্দিরা। বললেন, ‘পৃথিবীতে কোনো মানুষই শতভাগ পারফেক্ট নন। একজনের কোনো দিক ভালো তো অন্যদিক তুলনামূলক কম ভালো। দর্শক আলোচনা–সমালোচনা করবেনই। আমি কখনোই ভাবি না যে সবাই আমাকে পছন্দ করবেন বা প্রশংসা করবেন। এটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। বড় পর্দায় আমি একেবারেই নতুন। শেখার অনেক বাকি আছে। প্রতিনিয়ত শিখছি, শিখতে চাই আরও। দিন শেষে কেউ যখন বলেন, এখানে দুর্বলতা আছে, ওখানে দুর্বলতা আছে, আমি মনে করি, তাঁরা আমার মঙ্গল চান বলেই এমন মন্তব্য করেছেন। যেন আগামী দিনে আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারি। সমালোচনা মানুষকে পরিশুদ্ধ করে, এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।’
আমারবাঙলা/জিজি