ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মাত্র আট দিনের মাথায় মেহেদী হাসান নামের এক যুবককে তার স্ত্রী বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরপর নববধূ জান্নাত আক্তারকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় পুলিশ।
শুক্রবার (১৬ মে) দিনগত মধ্যরাতে আখাউড়া পৌর এলাকার মসজিদ পাড়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন।
নিহত মেহেদী হাসান (২৭) গত প্রায় ২০ বছর ধরে তার মাকে নিয়ে মসজিদপাড়া এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। তাদের পৈতৃক বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়। আখাউড়া শহরের একটি ফার্মেসিতে চাকুরি করতেন তিনি। আটক স্ত্রী জান্নাত আক্তার (২০) আখাউড়ার শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন মিয়ার মেয়ে।
আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন জানান, গত ৯ মে পারিবারিকভাবে মেহেদি হাসানের সঙ্গে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। আরেকটি ছেলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর স্বামী একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করলে সেটি তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। শুক্রবার রাতে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি জানান জান্নাত। স্বামী এতে রাজি না হলে কোমল পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে ছয়টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে স্বামীকে অচেতন করে সে। পরে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে হত্যা করেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোররাতে নিহতের স্ত্রী বাড়ির মালিককে ডেকে বলে তার স্বামী অসুস্থ। এরপর বাড়ির মালিক ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে দেখেন, মেহেদী হাসান ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মেহেদী হাসানের মা বকুল বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘মাত্র আট দিন হইছে আমার ছেলেরে বিয়ে করাইলাম। নতুন বউ আমার পুলাটারে মাইরা ফেললো। অন্য ছেলের সাথে এই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম বলেন, আমার ছোট ভাই একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করতো। সে খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণেই আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।
ওসি আরো জানান, আটক হওয়ার পর জান্নাত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আমারবাঙলা/ইউকে