সংগৃহিত
রাজনীতি

সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না

নিজেস্ব প্রতিবেদক: সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান দাবি করেছেন, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামিকে করা হয়েছে ।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

আব্দুল মঈন খান বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমাদের বলতে হচ্ছে, যে উদ্দেশ্য এবং আদর্শ নিয়ে এই দেশের লাখ লাখ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, যে আদর্শের জন্য তার নাম ছিল গণতন্ত্র। উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। আজকে ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের একটাই প্রশ্ন সেই গণতন্ত্র কোথায় গেল? সেই দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি কোথায় গেল? এটাই আজকের প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, একটি সরকার আজকে এ দেশে এসেছে, সে সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা মুখে বলে গণতন্ত্র, বাস্তবে করেছে একদলীয় শাসন। তারা এবার করেছে বাকশাল-২। এটা আমার কথা নয়, এটা বিশ্ববাসীর কথা।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে আপনারা দেখেছেন কীভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। মেগা উন্নয়নের নামে কীভাবে মেগা দুর্নীতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে। ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা অভিযোগে আসামি বানানো হয়েছে। এখানে যদি মানুষের ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ না থাকে। এ দেশে যদি মানুষের গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ না থাকে, তাহলে আজকে যারা কবরে শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের যে প্রশ্ন, কেন তারা এ দেশটি স্বাধীন করেছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তর আজকের আওয়ামী লীগ সরকারকে দিতে হবে।

আব্দুল মঈন খান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। এটা আজকে অত্যন্ত স্পষ্ট। যখন সেই ২৫ মার্চের কালরাতে পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেদিন আজকের আওয়ামী লীগ, যারা আজকে নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি বলে দাবি করে, তারা সেদিন পলায়নপর ভূমিকা নিয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর আওয়ামী লীগ দিতে পারবে, আমরা সেই উত্তর দিতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, যে কারণে স্বাধীনতার ঝান্ডা উঁচু করে তুলে ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিনের মেজর জিয়া বিদ্রোহ ঘোষণা করে, পাকিস্তানের একটি প্রশিক্ষিত অত্যাচারী হায়েনার মতো অত্যাচারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই স্বাধীনতার ঘোষণা শুধু বাংলাদেশে নয়, সেই কথা সারা বিশ্বে প্রচারিত হয়েছিল। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূচিত হয়েছিল। সারা বিশ্বের মানুষ জেনেছিল, একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হতে যাচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এর সঙ্গে আরেকটি কথা যোগ করতে চাই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি স্বয়ং অংশ নিয়েছিলেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। পালিয়ে লুকিয়ে থাকেননি কলকাতায় আরাম আয়েশে। তিনি যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধে জয়লাভ করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের বেশে দেশে ফিরেছেন। বাংলাদেশের মানুষ ভালোবেসে তাকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ খেতাব বীর উত্তম উপাধি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আরও একটি প্রশ্নের উত্তর আপনাদের দিতে চাই, যে প্রশ্ন আপনারা করেছেন, শুধু তারা নয়। আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি তাদের রাষ্ট্রীয় ভবনে রাষ্ট্রীয় ভোজসভা দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে তাকে সম্মান জানিয়েছেন।

এ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ আছে কি না প্রশ্নে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিতর্ক তোলা যাবে না কেন? আমরা তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। যে যেটা বলতে চায় বলবে। আওয়ামী লীগের কেউ কিছু বললে আমরা তার টুঁটি চেপে ধরি না। কাজে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ গণতন্ত্রে থাকবে। কিন্তু ইতিহাসের যে সত্য, সেটি ইতিহাসই নির্ধারিত করে। আজকে বলে দিতে হবে না, কারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করে এ দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।

তিনি আরও বলেন, আমি স্কুলের পাঠ্যবইয়ে যত গল্প লেখি না কেন, টেলিভিশনে, মাইকে যত বক্তব্য দিই না কেন, এসব মিথ্যার বেসাতি যেটা আওয়ামী লীগ করে যাচ্ছে সেটা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

আব্দুল মঈন খান বলেন, ব্রিটিশ আমলে ঔপনিবেশিক শাসকদের একটা নীতি ছিল, যেটা সারাবিশ্বে শত বছর ধরে পালিত হয়েছে, বাইরে থেকে এসে যদি কোনো ক্ষমতা দখল করতে হয়, ক্ষমতা পরিচালনা করতে হয়, তাহলে সেখানে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করো। মানুষকে বিভক্ত করে এক পক্ষকে আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দাও। আজকে দুঃখ ও লজ্জার সঙ্গে বলতে হয়, আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার, এমন এক সরকার যে দেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। যে কারণে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য বাংলাদেশের মানুষদের দুটি ভাগে ভাগ করে দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিতে চায়। কিন্তু তাদের এ চাওয়া কোনোদিন পূরণ হবে না।

এ সময় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আর দেরি নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনই পদক্ষেপ দরকার

জনস্বার্থে ন্যায্য ও সময়োপযোগী প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দেশের ত...

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী  

ইসি যে সময় ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে সে সময়ের জন্য প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী&rs...

ইরানের হামলায় ইসরায়েলে অনেক হতাহত

ইসরায়েলে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার মধ্যরাত ও রবিবার ভোরে ইসরায়েলের বি...

হঠাৎ উত্তপ্ত প্রেস ক্লাব, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

গণজমায়েতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে প্রব...

ড্রয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু মেসির মায়ামির

নতুন কিছু প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে জমকালো উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ...

আর দেরি নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনই পদক্ষেপ দরকার

জনস্বার্থে ন্যায্য ও সময়োপযোগী প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দেশের ত...

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী  

ইসি যে সময় ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে সে সময়ের জন্য প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী&rs...

হঠাৎ উত্তপ্ত প্রেস ক্লাব, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

গণজমায়েতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে প্রব...

যদি ইসরায়েল থামে তবে আমরাও থামবো: ইরান

ইরান-ইসরায়েল চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছ...

নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে বদ্ধপরিকর: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা