ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এক বিস্ময়কর তথ্য। ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে বাংলাদেশে পরিচিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ‘নিউটন দাস’ নামে এক যুবককে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
নিউটন দাস পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার। এলাকাটি সুন্দরবন সংলগ্ন সীমান্তবর্তী অঞ্চল। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া এই তরুণের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবিতে তাকে ঢাকার রাস্তায় লাঠি হাতে বিক্ষোভরত অবস্থায় দেখা যায়।
তবে নিউটন দাস নিজেকে ভারতের নাগরিক বলেই দাবি করছেন। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, পৈতৃক সম্পত্তির জটিলতা মেটাতে আমি ২০২৪ সালে বাংলাদেশে যাই এবং হঠাৎ করেই আন্দোলনের মধ্যে জড়িয়ে পড়ি। আমি ২০১৪ সাল থেকে কাকদ্বীপের ভোটার। ২০১৭ সালে ভোটার কার্ড হারিয়ে ফেলি, পরে ২০১৮ সালে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার সহায়তায় নতুন কার্ড পাই।
নিউটনের এক চাচাতো ভাই তপন দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নিউটনের জন্ম বাংলাদেশে। সে মহামারির পর এখানে জমি বিক্রি করতে এসেছিল, তারপর আর ফেরেনি। সে দুই দেশেই ভোট দিয়েছে। দুই দেশে ভোটার তালিকায় নাম লেখানো তারই ভুল।
এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। বিজেপি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলেছে। বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, লাখ লাখ বাংলাদেশি এখন পশ্চিমবঙ্গের ভোটার। নিউটনের ঘটনা এরই প্রমাণ। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সাদ শেখও মুর্শিদাবাদের ভোটার তালিকায় ছিলেন।
বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের সময় যাকে লাঠি হাতে দেখা গিয়েছিল, সেই নিউটন দাসই এখন কাকদ্বীপের নিবন্ধিত ভোটার। এটি ‘এগিয়ে বাংলা’ মডেলের আরেকটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুনাল ঘোষ এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে নজরদারি ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধের দায়িত্ব বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় সরকারের। কেউ স্থল, নৌ বা আকাশপথে প্রবেশ করুক না কেন, সেটা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীরই দেখার বিষয়। রাজ্য প্রশাসন তার দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করে। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে আমরা দোষী হতে পারি না।
নিউটন দাস আসলে কে-বাংলাদেশি না ভারতীয়, কিংবা তার দুই দেশে ভোটার হওয়াটাই বা কীভাবে সম্ভব হলো? এসব প্রশ্নের এখনও কোনো স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। তবে এই ঘটনা ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভোটার তালিকা কতটা নির্ভরযোগ্য, সেই প্রশ্ন আরো জোরালো হয়েছে বলেও দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমারবাঙলা/জিজি
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            