মহান মে দিবস ও জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাতে বগুড়ার নন্দীগ্রামে সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দয়ার ওপর বর্বর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মব সৃষ্টি করে প্রকাশ্যেই তাকে পিটিয়েছে দূর্বৃত্তরা। মধ্যযুগীয় কায়দায় সাংবাদিককে অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক নেতারা।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের ফিলিং স্টেশন এলাকায় হামলার শিকার হন সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দয়া। তিনি দৈনিক ভোরের ডাকে কর্মরত এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বিজরুল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিক নজরুল প্রতিদিনের মতো পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশনের পশ্চিমপাশে একটি রুটির দোকানে বসেন। এসময় ৮-৯ জন দূর্বৃত্ত এসে কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই সাংবাদিককে মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে সড়কের পাশে নিয়ে যায়। লাঠি, গাছের ডাল এবং লোহার পাইপ দিয়ে প্রায় আধাঘন্টা ধরে এলোপাতাড়ি মারধর করে। কোনো একটি সংবাদ প্রকাশের কথা বলছিল হামলাকারীরা। সাংবাদিকের বাম হাত ভেঙে দিয়ে মোবাইল ফোন এবং মানিব্যাগ নিয়ে তারা চলে যায়।
ভোরের ডাক সংবাদদাতার ওপর হামলার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী রাজু, বগুড়া জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান, জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মাকসুদ আলম হাওলাদার এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবির সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিক। এছাড়া জেলা-উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে অবস্থান নেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহবায়ক রাসেল মাহমুদ জানান, ইতিপূর্বে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় দুটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামী ছিলেন সাংবাদিক নজরুল। একাধিকবার এলাকাছাড়া হয়েছিলেন এবং থানার মধ্যেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। তিনি একযুগ ধরে নির্যাতনের শিকার। আওয়ামী লীগের শাসনামলে উপজেলা প্রশাসন তাকে সব দপ্তরে নিষিদ্ধ করেছিল। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক নেতারা৷
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (নন্দীগ্রাম সার্কেল) মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী জানান, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দূর্বৃত্তরা যেই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে।
আমারবাঙলা/ইউকে