মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত ‘টপ কমান্ডার’ বা শীর্ষ অপরাধীদের বিচার করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সবার বিচারই প্রায় আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করা হবে।
আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ নিয়ে দুই দিনব্যাপী সংলাপের দ্বিতীয় দিনে ‘গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রথম অধিবেশনে তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এই সংলাপের আয়োজন করেছে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ নামের একটি সংগঠন।
চিফ প্রসিকিউটরকে এই অধিবেশনে সঞ্চালক মনির হায়দার প্রশ্ন করেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে সক্ষমতা আছে, তা গণহত্যা, গুম-খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের এত বড় পরিধির বিচারের জন্য কি যথেষ্ট?’
জবাবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এই ট্রাইব্যুনালের ১০ জন প্রসিকিউটর ও ১৭ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা আছেন। তাঁদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গুম, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে, সেই অপরাধের যাঁরা মাস্টারমাইন্ড (মূল হুতা), যাঁরা একদম সর্বোচ্চ জায়গায় বসে থেকে অপরাধগুলো সংঘটিত করেছিলেন প্রাধান্য দিয়ে, তাঁদের বিচার করা। সে ক্ষেত্রে এই ট্রাইব্যুনাল হাজার হাজার মানুষের বিচার করতে পারবে না এবং সেই লক্ষ্যে অগ্রসরও হচ্ছেন না তাঁরা।
সারা দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিল। এর সঙ্গে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকাংশ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা ছিল। দেশব্যাপী সবকিছুর বিচার করতে গেলে এই ট্রাইব্যুনালের পক্ষে তা সম্ভব নয় বলেও জানান চিফ প্রসিকিউটর।
তিনি আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত টপ কমান্ডারদের বিচার করা হয়। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার প্রধান নিউক্লিয়াস ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর নিচের দিকে কয়েকজন ছিলেন, তাঁদের বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁরা তাঁদের বিচার শেষ করতে চান। সেই সক্ষমতা তাঁদের আছে বলে জানান তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মামলা ও সবার বিচারই প্রায় আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করা যাবে, বলেন তিনি।
দেশব্যাপী যত অপরাধ হয়েছে, সে জন্য বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে এবং সাধারণ আদালতে বিচার চলছে, সেটা চলবে বলেও জানান তাজুল ইসলাম। ‘সেই বিচার করতে কত সময় লাগবে, সেটা সংশ্লিষ্ট আদালত বলতে পারবেন।’
দুই দিন আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাঁদের অনেক প্রাধান্য আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রাধান্য হচ্ছে যারা দেশটাকে খুন ও গুমের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল, যারা ছাত্র-জনতার রক্তে এই বাংলার মাটি রঞ্জিত করেছে, তাদের বিচার এক নম্বর প্রাধান্য। এই জায়গায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আমার বাঙলা/এনআর
 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            