সুবিধাভোগী জনগণের দাবী উপেক্ষা এবং বিতর্কের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষা নদীর উপর কদমরসুল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পশ্চিম প্রান্তে নারায়ণগঞ্জ শহর এবং পূর্ব প্রান্তে বন্দরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবী ছিল দীর্ঘদিনের। তারই প্রেক্ষিতে কদমরসুল সেতু প্রকল্প ২০১৭ সালে একনেকের সভায় চুড়ান্ত করা হয়।
সেতুটির নির্মাণ কাজ যৌথভাবে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে। কিন্তু নগরের বাস্তবতা ও সংকট বিবেচনা না করেই সেতুর নকশা চুড়ান্ত করা হয়।
এই প্রকল্প প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন চলমান থাকলেও সেতু ব্যাবহারকারীদের সঙ্গে কোন প্রকার মতবিনিময় বা তাদের কোন মতামত গ্রহণ করা হয়নি।
নকশা অনুযায়ী সেতুর পশ্চিম প্রান্তের অংশ শহরের ব্যাস্ততম এলাকা ফলপট্রি এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নামবে। এমনিতেই এই এলাকাটিতে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। নকশা অনুযায়ী এটি বাস্তবায়ন হলে শহরে যানজট আরো ভয়ানক আকার ধারন করবে।
বন্দরের একরামপুরের তালতলা অংশে বেশ কিছু স্থাপনা অপসারণের কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হলেও শহরের অংশে কোন স্থাপনা অপসারণ করে প্রবেশ পথ প্রশস্ত করার কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি।
একসময় যাতায়াত ব্যাবস্থা ভাল থাকার কারণে নারায়ণগঞ্জকে পূর্ববঙ্গের সিংহদ্বার বলা হতো। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং অপরিকল্পিত পরিবহণ ব্যবস্থার কারণে জনদুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। চলমান নকশা অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হলে জনদুর্ভোগ আরো বাড়বে বলে স্থানীয়দের ধারনা।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে একনেকে চুড়ান্ত হওয়া প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২৬ সালের মে মাসের মধ্যে নির্মাণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, প্রশাসনিক জটিলতা, প্রকল্পের নকশা ও সংযোগ সড়কের প্রবেশ পথ পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক থাকার কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হয়।
সেতুটির মূল দৈর্ঘ্য ৩৮০ মিটার, প্রস্থ ১২ দশমিক ৮০ মিটার, সংযোগ সড়ক ১৩৯৭ মিটার। প্রকল্প ব্যায় ৭৩৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের বক্তব্য হচ্ছে-নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকা কিংবা জনসাধারণের মতামত গ্রহণ না করার কারনে সরকারী কর্মকর্তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সেতুর কাজ করা হচ্ছে।
কেননা, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা কেউ এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা না। ফলে এই সেতুর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে তাদের কিছু যায় আসে না।
আমারবাঙলা/জিজি