রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নে দুস্থ, অসহায় ও অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভিজিএফ চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সচিব নাসির উদ্দিন নিজেই যেন চেয়ারম্যানের ভূমিকা পালন করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, ১৪০৩ জন দুস্থ ও অতি দরিদ্র পরিবারকে ১০ কেজি করে চাউল দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। তবে সেখানে ওজন মাপার কোনো যন্ত্র ছিল না, ট্যাগ অফিসারের সামনে বালতিতে করে চাউল দেওয়া হচ্ছিল। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চাউলের ওজনে গরমিল হচ্ছে।
পরীক্ষামূলকভাবে বিতরণকৃত চাউল ওজন করতে গেলে দেখা যায়, ১০ কেজির পরিবর্তে আট দশমিক পাঁচ থেকে নয় দশমিক পাঁচ কেজি পর্যন্ত চাউল দেওয়া হচ্ছে।
হোসেনডাঙ্গা গ্রামের আহাদ আলী বলেন, "আমি তিনটি কার্ড থেকে চাউল নিয়েছি, কিন্তু ওজনে তিন কেজি কম পেয়েছি।" একই অভিযোগ করেছেন আরও অনেক ভুক্তভোগী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, "ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিলকিস বানু মহিলা হওয়ায় সচিব নাসির উদ্দিন নিজেই পরিষদ পরিচালনা করছেন। কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে সমন্বয় করা হয়নি, বরং নিজের ইচ্ছামতো কার্ড দেওয়া হয়েছে।"
এদিকে, অনেকে অভিযোগ করেন, প্রকৃত দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষের কাছে কার্ড পৌঁছেনি, বরং একাধিক কার্ডধারী কিছু সুবিধাভোগী চাউল নিচ্ছেন।
ট্যাগ অফিসার হযরত আলী খান বলেন, "১০ কেজি করেই চাউল দেওয়া হচ্ছে, তবে মাপে কিছুটা কম হতে পারে।"
ইউপি সচিব নাসির উদ্দিন বলেন, "আমরা ১৪০৩ জনের জন্য ১৪,০৩০ কেজি চাউল এনেছি এবং সঠিকভাবেই বিতরণ করছি। কিছু রাজনৈতিক মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ তুলছে।"
ইউপি চেয়ারম্যান বিলকিস বানু জানান, "আমি তিন দিন আগে সচিবের ওপর দায়িত্ব দিয়ে এসেছি। আমি দুর্নীতি পছন্দ করি না, সচিবকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে কেউ কম না পায়।"
চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম. আবু দারদা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস.এম. আবু দারদা বলেন, "সুষ্ঠুভাবে চাউল বিতরণ করার নির্দেশ দিয়েছি। একই ব্যক্তি যেন একাধিক কার্ডে চাউল না নিতে পারে, সে বিষয়েও নজর রাখতে বলেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
আমারবাঙলা/ইউকে
 
                                    
                                 
                 
                     
                     
                         
                                                     
                         
                                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                            