প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন বহাল রেখেই শিক্ষাপঞ্জির অন্যান্য ছুটি কমিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মূল কাজই হচ্ছে সাক্ষরতা। স্কুল স্তরে যদি সাক্ষরতা করতে হয়, কতগুলো প্রতিবন্ধকতা আমাদের পার হতে হচ্ছে। কেন আমরা সহজে এগোতে পারছি না। এই বিষয়গুলো আমি আপনাদের সামনে প্রকাশ করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘স্কুলে যদি পড়াশোনা হতে হয়, তবে প্রয়োজনীয় একটি শর্ত হচ্ছে কন্ট্র্যাক্ট আওয়ার অর্থাৎ একজন শিক্ষক ছাত্রকে কতটুকু সময় দিতে পারছেন। এই কন্ট্র্যাক্ট আওয়ার প্রথমত নির্ভর করছে কত দিন স্কুল খোলা থাকে। আপনারা ক্যালেন্ডার দেখেন, ৩৬৫ দিনের মধ্যে আমার স্কুল খোলা থাকে মাত্র ১৮০ দিন। খেয়াল করেছেন ব্যাপারটা? পড়াশোনাটা যে হবে, স্কুল কত দিন খোলা পাচ্ছি? এর মানে, আমাদের অনেক অপ্রয়োজনীয় ছুটি রয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি ছুটি যদি কিছু কমিয়ে আনা যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে এটা করছি, কারণ বিচ্ছিন্নভাবে করলে হবে না।’
ছুটি কমানোর ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন থেকে কমিয়ে এক দিন করার চিন্তা আছে কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপাতত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ক্যালেন্ডারে ছুটি কিছুটা কমানো। আমরা যদি সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিনকে এক দিন করতে চাই, সেটা সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেহেতু একই রকম, তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আলাদাভাবে করা কঠিন। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একধরনের দাবি আছে, শিক্ষকেরা হচ্ছেন ভ্যাকেশন ডিপার্টমেন্টে, নন–ভ্যাকেশন হতে চাইলে এর সঙ্গে সরকারের আর্থিক সংশ্লেষের প্রসঙ্গ আছে। ফলে এ ধরনের একটা চিন্তা আছে, তবে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আমাদের ক্যালেন্ডারে যে ছুটি আছে, সে ক্ষেত্রে কিছুটা কমিয়ে আনব।’
কোন কোন দিন ছুটি কমাবেন, সেটা ঠিক হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা চূড়ান্ত হলে আপনাদের জানিয়ে দেব।’
বর্তমানে প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরে গড়ে ৭৫ দিন ছুটি দেওয়া আছে। তবে বিভিন্ন আন্দোলন, দুর্যোগ বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখন ঘাটতি বাড়ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র : ইউএনবি
আমারবাঙলা/এফএইচ