ওয়ানডে ফরম্যাটে দীর্ঘদিন ধরে ছন্দে নেই বাংলাদেশ; সংকট কাটিয়ে এক বছরের মধ্যেই দলকে গোছাতে চান মিরাজ। বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসরে ব্যর্থতা, পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতেও একের পর এক হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের সবচেয়ে ‘শক্তিশালী’ সংস্করণটি।
এমন সংকটময় সময়ে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও মেয়াদ বেশি নয়, আপাতত এক বছরের জন্যই ওয়ানডে দলের দায়িত্ব পেয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তবুও এই স্বল্প সময়ে দলকে গুছিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নতুন ভূমিকায় নিজের ভাবনার কথা জানালেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘লম্বা সময় পেলে অবশ্যই ভিশন তৈরি করা যায়। কিন্তু যেহেতু দল হিসেবে আমরা এখন একটা কঠিন সময় পার করছি, সম্ভবত বোর্ড চাচ্ছে এই এক বছরে একটা জায়গায় দাঁড় করাতে। এরপর হয়তো তারা চিন্তা করবে ভবিষ্যতে কী করা যায়। ’
গত কয়েক বছরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স ছিল বেশ হতাশাজনক। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে মাত্র দুটি ম্যাচে জয়, চলতি বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোনো জয় না পাওয়া, আর দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতেও বাজে ফল। সব মিলিয়ে সংকট যেন বাড়ছেই। ২০২৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত খেলা ৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র ১৪টি।
সবশেষ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অধীনে ১৩ ম্যাচে জয় আসে কেবল চারটিতে। ফলে আইসিসি র্যাংকিংয়েও বড় ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। নেমে গেছে ১০ নম্বরে! যা ২০০৬ সালের পর সর্বনিম্ন অবস্থান।
এমন প্রেক্ষাপটে এক বছরের জন্য অধিনায়কত্ব পেয়ে বড় দায়িত্বই কাঁধে নিয়েছেন মিরাজ। জানালেন, সিনিয়র দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ অবসরে চলে যাওয়ায় এখন নতুনদের স্থায়ী জায়গা করে দেওয়াটাই তার অন্যতম লক্ষ্য, ‘এখন সময় এসেছে ওয়ানডে দলকে একটা নির্দিষ্ট কাঠামোয় দাঁড় করানোর। যারা সুযোগ পাবে, এক বছরের মধ্যে তাদের জায়গা সেট করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। ’
জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব অবশ্য নতুন নয় মিরাজের কাছে। গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে শান্তর অনুপস্থিতিতে এক ম্যাচ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওয়ানডেতে জয়ের মুখ না দেখলেও টেস্টে ক্যারিবীয়দের হারিয়ে সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। তবে হঠাৎ পাওয়া অধিনায়কত্বের চেয়ে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করেন মিরাজ। আর সেই অভিজ্ঞতাই এবার কাজে লাগাতে চান পুরোপুরি।
মিরাজ বলেন, ‘সেদিনের পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। আমি শুধু মাঠের দায়িত্বে ছিলাম, কিন্তু পুরো সেটআপ ছিল শান্তর পরিকল্পনায়। এবার একটা নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করার চেষ্টা থাকবে আমার। দলকে কীভাবে বুস্ট আপ করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করব। ’
আগামী জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে মিরাজের নেতৃত্বে নতুন পথচলা। সম্ভাব্য ২১টি ওয়ানডে ম্যাচের এই মিশনে লক্ষ্য একটাই..বাংলাদেশকে ওয়ানডে ফরম্যাটে পুরনো ধারায় ফিরিয়ে আনা।
আমারবাঙলা/ইউকে