আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে কাবুলগামী একটি বাসের সঙ্গে একটি ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
হেরাতের তথ্য ও সংস্কৃতি অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তালেবান কর্মকর্তা আহমাদুল্লাহ মোত্তাকি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার শিকার বাসটি ইরান থেকে বিতাড়িত আফগানদের বহন করছিল। বাসে থাকা সব যাত্রী এবং সংঘর্ষের শিকার অন্য বাহনের অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শিশু ছিল বলে বিবিসি পশতুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাস চালকের খামখেয়ালিপনা ও মাত্রাতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আফগানিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনা প্রায় নিয়মিত আপদ। কয়েক দশকের সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট এবং ট্র্যাফিক আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ না হওয়াই এর অন্যতম কারণ।
গত শতাব্দীর ৭০ এর দশক থেকে লাখ লাখ আফগান নাগরিক ইরান ও পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আগ্রাসন ও ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই ঢল বাড়ে। এর ফলে ইরানে অভিবাসীবিরোধী মনোভাব তীব্র হয় এবং আফগানদের প্রতি বৈষম্য বাড়তে থাকে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নথিবিহীন আফগানদের তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে তেহরান।
এর আগে, জুলাই মাসের মধ্যে নথিহীন আফগানদের স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল তেহরান। তবে জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে কথিত ১২ দিনের যুদ্ধের পর দেশটি নিরাপত্তা হুমকির অভিযোগ তুলে জোরপূর্বক লাখ লাখ আফগানকে বের করে দিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধু জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ইরান ছেড়েছে ১৫ লাখের বেশি আফগান, যাদের অনেকে কয়েক পুরুষ ধরে সেখানে বাস করছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বর্তমান তালেবান শাসনের অধীনে থাকা আফগানিস্তানের সামর্থ্য নেই ফিরে আসা বিপুলসংখ্যক নাগরিককে পুনর্বাসিত করার। দেশটি ইতোমধ্যেই পাকিস্তান থেকে ফেরত আসা অভিবাসীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে।
আমারবাঙলা/এফএইচ